Menu

Press Release – Day 1

বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব ২০১৭- এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন
প্রেস বিজ্ঞপ্তি

বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ৬ষ্ঠ বারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব। ‌সংগীত জাগায় প্রাণ- এ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে ২৬ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় ধানমন্ডির আবাহনী মাঠে শুরু হয় পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসব। উৎসবের উদ্বোধনী পর্বেই ড. এল সুব্রহ্মমণ্যন বেহালায় আভোগী রাগ পরিবেশন করেন। তার সঙ্গে মৃদঙ্গমে সঙ্গত করেন শ্রী রামামূর্তি ধুলিপালা, তবলায় ছিলেন পণ্ডিত তন্ময় বোস এবং মোরসিং-এ ছিলেন সত্য সাই ঘণ্টশালা।
এরপরেই অর্কেস্ট্রা পরিবেশন করতে মঞ্চে আসে উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ আস্তানা সিম্ফনি ফিলহারমোনিক। দলটি প্রথমে তিলেস কাজগালিব রচিত একটি সিম্ফোনির কিছু অংশ এবং পি আই চাইকভস্কির বিখ্যাত রচনা ‘সোয়ান লেক’-এর কিয়দংশ পরিবেশন করে। অর্কেস্ট্রা পরিচালনা করেন আস্তানা সিম্ফনি ফিলহারমোনিক-এর আর্টিস্টিক ডিরেক্টর বেরিক বাত্যরখান।
‌আস্তানা সিম্ফনি ফিলহারমোনিক-এর আর্টিস্টিক ডিরেক্টর বেরিক বাত্যরখান এর পরিচালনায় আস্তানা সিম্ফনি ফিলহারমোনিক এর সঙ্গে কর্ণাটকি বেহালার যুগলবন্দি পরিবেশন করেন ড. এল সুব্রহ্মমণ্যন। এসময় রাগ শান্তিপ্রিয়া বাদন পরিবেশন করেন তারা। এর সঙ্গে মৃগঙ্গমে ছিলেন শ্রী রামামূর্তি ধুলিপালা, তবলায় ছিলেন পণ্ডিত তন্ময় বোস এবং কাঞ্জিরায় ছিলেন সত্য সাই ঘণ্টশালা। পরিবেশন শেষে সব শিল্পীকে উৎসব স্মারক তুলে দেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, এমপি এবং তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, এমপি।
রাত ১০টায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় ‌‌`বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব ২০১৭’- এর। এসময় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ‍উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, এমপি। মঞ্চে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের মান্যবর রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, স্কয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী, আবাহনী লিমিটেডের সভাপতি সালমান এফ রহমান, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আর. এফ. হোসেন এবং বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান জনাব আবুল খায়ের।
উদ্বোধনী পর্বে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সদ্য প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক, গুণী শিল্পী বিদূষী গিরিজা দেবী এবং বিদূষী কিশোরী আমনকরের স্মৃতির উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা জানাতে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সভাপতির বক্তব্যে মাননীয় অর্থমন্ত্রী জনাব আবুল মাল আবদুল মুহিত, এমপি আয়োজকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, ‘শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সবগুলো উৎসবে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি নিজেকে অত্যন্ত সৌভাগ্যবান মনে করছি। এবারের আয়োজনের সর্বপ্রথম প্রাচ্য এবং প্রতীচ্যের শাস্ত্রীয় সংগীতকে এক করার চেষ্টা করা হয়েছে’। তিনি আরো বলেন, ‘এবারের উৎসব আয়োজন করতে জায়গা নিয়ে কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তাই আমি চাইব এ ধরনের জনকল্যাণমূলক অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য একটা নির্দিষ্ট এলাকা ঠিক করে দিতে। তাছাড়া অন্যান্য দেশে এরকম অনুষ্ঠানের শুরুতে সে দেশের নিজস্ব অর্কেস্ট্রা দিয়ে পরিবেশন করা হয়। দুর্ভাগ্যবশত আমাদের সেটা নেই। আমি চাইব আগামী আয়োজনে বাংলাদেশের নিজস্ব অর্কেস্ট্রা পরিবেশিত হোক। আমাদের গুণী মানুষদের নিয়ে চেষ্টা করলে হয়ত আমরা তা করতে পারব।’
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর স্মরণ করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আবাহনী ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা শেখ কামাল এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের। তিনি বলেন, ‘সংগীত আমাদের পরিশুদ্ধ করে, অসাম্প্রদায়িক এবং মুক্তচিন্তার উদ্রেক করে, দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসতে শেখায়। এই উৎসবের মাধ্যমে সেই চেতনার জাগরণ ঘটবে। সাম্প্রদায়িক এবং অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করতে এই উৎসব আমাদের প্রেরণা জোগাবে।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রিংলা উৎসবে নিজের সম্পূর্ণ বক্তব্য দেন বাংলায়। তিনি বলেন, ‘বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবে উপস্থিত হতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এই উৎসব অসাম্প্রদায়িক এবং বহুসংস্কৃতির ধারক বাংলাদেশের মানুষকে আরো অনুপ্রাণিত করবে।’
স্কয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘দেরিতে হলেও আনন্দের ব্যাপার এই যে, এই উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমি এই উৎসবের অবিস্মরনীয় সাফল্য কামনা করছি’।
আবাহনী লিমিটেডের সভাপতি সালমান এফ রহমান বলেন, ‘এই উৎসবের আয়োজনকে যারা সম্ভব করেছেন তাদের অভিনন্দন জানাই’।
ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আর. এফ. হোসেন বলেন, ‘আমরা গর্বিত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব বাংলাদেশে আয়োজিত হয়। এরকম উৎসব নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে’।
বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের নিজের বক্তব্যে উৎসবের সকল পৃষ্ঠপোষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বিশেষত: গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশে একটি সাংস্কৃতিক বিপ্লব হলে দেশের মানুষ আরো মানবিক হবে। আর যতদিন পর্যন্ত আমরা রশিদ খাঁ, ড. এল সুব্রহ্মমণ্যনের মতো বড় মাপের শিল্পী তৈরি করতে না পারব ততদিন আমাদের লক্ষ্য অর্জিত হবে না’। নিজ বক্তব্যের শেষে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন- আগামীতে এই উৎসব ড. আবুল মাল আবদুল মুহিত, স্যার ফজলে হাসান আবেদ এবং ড. সনজীদা খাতুনকে উৎসর্গ করার।
এরপর সরোদ পরিবেশন করেন রাজরূপা চৌধুরী। তার সাথে তবলায় সঙ্গত করেন পণ্ডিত অভিজিৎ ব্যানার্জি। শিল্পী রাজরূপা নিজের সরোদে বাজিয়েছেন অনিল মধ্যম রাগ। পরিবেশনা শেষে শিল্পীদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, এমপি। এরপরে খেয়াল পরিবেশন করেন বিদূষী পদ্মা তালওয়ালকর। তার সাথে সঙ্গত করেন অঙ্কিতা দেওল (কণ্ঠ), তবলায় ছিলেন সঞ্জয় অধিকারী এবং হারমোনিয়ামে রূপশ্রী ভট্টাচার্য্য। তিনি পরিবেশন করেন কেদার রাগ।
এরপরে সংগীত পরিবেশন করবেন ফিরোজ খান (সেতার), সুপ্রিয়া দাস (খেয়াল), রাকেশ চৌরাসিয়া (বাঁশি) ও পূর্বায়ন চ্যাটার্জি (সেতার)।
সংগীত উপভোগের পাশাপাশি খাবার ও পানীয়ের জন্য উৎসব প্রাঙ্গণে রয়েছে ফুড কোর্ট। পাশাপাশি উৎসব প্রাঙ্গণে আরও চলছে বাংলাদেশের সংগীত সাধক ও তাদের জীবনী নিয়ে একটি সচিত্র প্রদর্শনী এবং বেঙ্গল ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেকচার, ল্যান্ডস্কেপস অ্যান্ড সেটলমেন্ট এর ‘সাধারণের জায়গা’ শীর্ষক প্রদর্শনী।
এ ছাড়া উৎসব প্রাঙ্গণে স্টল স্থাপন করেছে বেঙ্গল ডিজিটাল, বেঙ্গল এক্সপ্রেস, বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়, অরণ্য, বেঙ্গল ভিজ্যুয়াল আর্টস প্রোগ্রাম, বেঙ্গল বই, ব্র্যাক ব্যাংক ও স্কয়ার গ্রুপ। আছে ব্র্যাক ব্যাংকের এটিএম বুথ। সাংবাদিকদের জন্য রয়েছে ওয়াইফাই জোন।
বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব ২০১৭-এর নিবেদক স্কয়ার গ্রুপ। আয়োজন সর্মথন করছে ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড। অনুষ্ঠানে সম্প্রচার সহযোগী চ্যানেল আই। মিডিয়া পার্টনার আইস বিজনেস টাইমস। আতিথেয়তা সহযোগী প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও। সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছে বেঙ্গল গ্রুপ। অনুষ্ঠান আয়োজিত হচ্ছে বেঙ্গল ডিজিটাল, বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের সহযোগিতায়। ইভেন্ট ব্যবস্থাপনায় ব্লুজ কমিউনিকেশনস। উৎসবের সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছে পারফেক্ট হারমনি, সিঙ্গাপুর।
গত পাঁচ বছর ধরে আয়োজিত ‘বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব’ শিল্পী ও দর্শকের অংশগ্রহণের নিরিখে এরই মধ্যে এই উপমহাদেশ তথা বিশ্বের র্সবাধিক বড় পরিসরের উচ্চাঙ্গসংগীতের আসর হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এ বছর উৎসব উৎসর্গ করা হয়েছে বরেণ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক ও সংস্কৃতিতাত্ত্বিক এমিরেটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানকে।

ড. এল সুব্রামানিয়াম
ড. এল সুব্রামানিয়াম আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত ভারতীয় বেহালাবাদক। তাঁর বাবা অধ্যাপক ভি লক্ষ্মীনারায়ণের অধীনে তিনি প্রশিক্ষিত হন। পেশাগত জীবনে স্বনামধন্য বাদক হওয়ার পাশাপাশি তিনি একজন প্রসিদ্ধ সুরকারও। তিনি অর্কেস্ট্রা, ব্যালের পাশাপাশি হলিউডের চলচ্চিত্রেও সুরারোপ করেছেন। তিনি ভারত এবং ভারতের বাইরে বিভিন্ন দেশে সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন এবং বিভিন্ন স্বনামধন্য শিল্পীর সাথে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। তাঁদের মধ্যে কে. ভি. নারায়ণস্বামী, সেম্মাঙ্গুদী শ্রীনিবাস আইয়ার, ড. বালামুরালি কৃষ্ণ অন্যতম। সঙ্গীতের ক্ষেত্রে সুব্রামানিয়ামের অবদান অসংখ্য পুরস্কারের মাধ্যমে স্বীকৃতি পেয়েছে। তিনি পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ পুরস্কার লাভ করেন, গ্র্যামি পুরস্কারে মনোনীত হন, আইটিএম ইউনিভার্সিটি থেকে ডি. লিট সম্মাননা, লিমকা বুক অব রেকর্ডস থেকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার, গ্লোবাল ইন্ডিয়ান মিউজিক অ্যাকাডেমি থেকে বেস্ট কর্ণাটক ইনস্ট্রুমেন্টাল এলবাম ইননোভেশানস, উত্তম ভাগ গায়াকর ভাসান্ত পুরস্কার, বিগ স্টার আইএমএ পুরস্কার, বেঙ্গলুরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট সম্মাননা, সংগীত নাটক একাডেমী থেকে ক্রিয়েটিভ মিউজিক পুরস্কার, আইআইটি মাদ্রাজ থেকে বেস্ট ওয়েস্টার্ন ইনস্ট্রুমেট্রালিস্ট এবং অল ইন্ডিয়া রেডিও থেকে সেরা বেহালাবাদক হিসেবে প্রেসিডেন্ট’স অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেন। তিনি সুব্রামানিয়াম একাডেমি অব পারফর্মিং আর্টস এবং ভারতের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক সংগীত উৎসব লক্ষ্মীনারায়ণ গ্লোবাল মিউজিক ফেস্টিভালের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক।

আস্তানা সিম্ফনি ফিলারমনিক অর্কেস্ট্রা
কাজাখস্তানের অন্যতম খ্যাতনামা অর্কেস্ট্রা দল আস্তানার স্টেট একাডেমিক ফিলারমনিক সিম্ফনি অর্কেস্ট্রা ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর শৈল্পিক পরিচালক বেরিক বাত্যরখান এবং প্রধান সঞ্চালক এরনার নুরটাযিন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সম্মাননাপ্রাপ্ত। আস্তানা ফিলারমনিক অর্কেস্ট্রার সঙ্গে কাজ করেছেন অনেক স্বনামধন্য শিল্পী, যাদের মাঝে কে পেন্ডারকি, ভি আশকেনাজি, আর গাটার, এ চাইকোভস্কি, আর কানেট্টি এবং ডি ব্রোস অন্যতম। এছাড়া প্লাকিডো ডমিঙ্গো, লিয়ানা ইস্কাদজে, ভ্লাদিমির ক্রাইনেভ এবং ডেনিস মাতযুয়েভ প্রমুখ খ্যাতনামা শিল্পীদের সাথেও দলটি পরিবেশনায় অংশ নিয়ে থাকে।
২০১১ সালে আস্তানা ফিলারমনিক অর্কেস্ট্রা মিশরের অপেরা থিয়েটারের সঙ্গে বিশ্বের প্রথম আরবি সঙ্গীতানুষ্ঠান এইচ গাবর-এর ‘প্রাকসা’য় অংশগ্রহণ করে। দলটি কাজাখস্তানের বাইরেও জার্মানি, ইতালি, গ্রিস ও মিশরসহ বিশ্বের বহু দেশে সংগীত পরিবেশন করেছে।

রাজরূপা চৌধুরী
রাজরূপা চৌধুরী বাংলাদেশে বসবাসরত একজন ভারতীয় সরোদ শিল্পী। তিনি ২০ বছর ধরে সিদ্ধার্থ রায় চৌধুরীর কাছে তালিম নেন এবং জয়দীপ ঘোষের কাছে প্রশিক্ষণ নেন। রাজরূপা চৌধুরী রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর অধ্যয়নকালে সেখানকার শীর্ষ সম্মাননা লাভ করেন, যা তাঁকে উত্তর ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীত চর্চায় অনুপ্রেরণা যোগায়। তিনি ভারত ও ভারতের বাইরেও সংগীত পরিবেশন করেছেন। বাবা আবদুল্লাহ খান স্মারক সংগীত প্রতিযোগিতা (১৯৯৬), সল্ট লেক সংগীত প্রতিযোগীতা (১৯৯৮), ডোভার লেন সংগীত প্রতিযোগিতা (১৯৯৯), অল ইন্ডিয়া রেডিও সংগীত প্রতিযোগিতা (২০০১) ও সুতানটি পরিষদ সংগীত প্রতিযোগিতায় (২০০৪) তিনি প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং আইটিসি-এসআরএ প্রমিজিং আর্টিস্ট পুরস্কার (২০০১) লাভ করেন।

পদ্মা তালওয়ালকর
পদ্মা তালওয়ালকর একজন ভারতীয় শাস্ত্রীয় কণ্ঠসংগীত শিল্পী। তিনি গোয়ালিয়র, কিরানা এবং জয়পুর- এই তিন মৌলিক ঘরানার খেয়ালে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। পিতামহ কানেবুভার কাছে তাঁর সঙ্গীতে হাতেখড়ি এবং প্রয়াত পণ্ডিত গঙ্গাধারবুভা পিম্পালখারের শিষ্যত্ব লাভ করেন। পরবর্তীতে মঘুবাই কুর্দিকার এবং গজাননরাও জোশির নিকট দীক্ষা নেন। উপরোক্ত ঘরানার মিশেলে এক স্বকীয় বৈশিষ্ট্য রয়েছে তাঁর পরিবেশনায়। তিনি সঙ্গীত নাটক একাডেমি পুরস্কার, রাঝানস প্রতিষ্ঠান পুরস্কার, প্রয়াত শ্রীমতি ভাত সালাবাই ভিমসেন জোশি পুরস্কার, পণ্ডিত যশরাজ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তালওয়ালকার ভারতের অসংখ্য সঙ্গীত উৎসবে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি বিখ্যাত তবলা বাদক সুরেশ তালওয়ালকরের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি তবলাবাদক সত্যজিৎ তালওয়ালকর ও সাভানী তালওয়ালকরের জননী।

ফিরোজ খান
ফিরোজ খান বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট সেতার বাদক। মামা খুরশিদ আলমের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি সংগীতের ভুবনে যাত্রা শুরু করেন এবং প্রয়াত লক্ষ্মী কান্ত দে’র কাছ থেকে দীক্ষা গ্রহণ করেন। বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের বাইরের মঞ্চেও তিনি সেতার পরিবেশন করেছেন। দীর্ঘ সংগীত জীবনে তিনি বিভিন্ন মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারেও ভূষিত হন। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ বেতারের সংগীত পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত আছেন।

সুপ্রিয়া দাস
সুপ্রিয়া দাস বাংলাদেশের একজন শাস্ত্রীয় কণ্ঠসংগীত শিল্পী। তিনি খেয়ালে বিশেষভাবে পারদর্শী। মা সুজাতা পালের কাছে তাঁর সংগীতে হাতেখড়ি। পরবর্তীতে পণ্ডিত রামকানাই দাস ও রেজওয়ান আলির কাছে তালিম নেন। তিনি বর্তমানে বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের একজন শিক্ষানবিশ এবং পণ্ডিত উলহাস কশলকরের নিকট দীক্ষা নিচ্ছেন।

রাকেশ চৌরাসিয়া
রাকেশ চৌরাসিয়া একজন প্রখ্যাত ভারতীয় বংশীবাদক। তিনি কিংবদন্তী পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়ার ভগ্নিপুত্র এবং ছাত্র। তিনি একক পরিবেশনার পাশাপাশি কাজ করেছেন ওস্তাদ জাকির হুসাইন, বেলাফ্লেক, এডগার মেয়ের এবং জশুয়া রেডমানের সাথে। দেশে বিদেশে সমানভাবে পরিচিত এই শিল্পীর উল্লেখযোগ্য পরিবেশনার মধ্যে অন্যতম ওমাড, প্যারিসের ফেস্টিভাল অব সেইন্ট-ডেনিস, ইংল্যান্ডের লেইসেস্টার আন্তর্জাতিক সংগীত উৎসব এবং বিবিসি রেডিওতে রানী এলিজাবেথের সিলভার জুবিলি উপলক্ষে ২৪ ঘণ্টা সরাসরি সম্প্রচারিত অনুষ্ঠান। ভারতীয় সংগীত একাডেমি পুরস্কার, ড. এ পি জে আবদুল কালাম পুরস্কার, আদিত্য বিড়লা কালাকিরণ পুরস্কার, গুরু শিষ্য পুরস্কার, আইডব্লিউএপি- যশরাজ সঙ্গীত রত্ন এবং পান্না লাল ঘোষ পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন তিনি।

পূর্বায়ন চ্যাটার্জি
পূর্বায়ান চ্যাটার্জি একজন স্বনামধন্য ভারতীয় সেতারবাদক। তিনি সেনিয়া মাইহার ঘরানার একজন শিল্পী। পিতা পণ্ডিত পার্থ প্রতিম চ্যাটার্জির উত্তরসুরি এবং সরোদ কিংবদন্তী ওস্তাদ আলী আকবর খানের শিষ্য। তিনি দেশে ও বিদেশে বহু মঞ্চে সেতার পরিবেশন করেছেন। শঙ্কর মহাদেবন এবং ওস্তাদ জাকির হুসাইনের সাথে তাঁর যুগলবন্দী পরিবেশনা উল্লেখযোগ্য। আদিত্য বিক্রম বিড়লা পুরস্কার, প্রেসিডেন্টস অ্যাওয়ার্ড এবং রোটারি আন্তর্জাতিক পুরস্কারে সম্মানিত তিনি। চ্যাটার্জী বর্তমানে ব্যান্ড ক্লাসিকুল ও স্ট্রিং স্ট্রাক এবং শাস্ত্রীয় সিন্ডিকেটের একজন সদস্য।

thumbnail thumbnail thumbnail thumbnail