Menu

Press Release – Day 4

২৭.১১.২০১৬
শেষ হলো বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব ২০১৬-এর চতুর্থ দিনের আয়োজন
পাঁচ দিনব্যাপী বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের চতুর্থ দিনের আয়োজন শুরু হয় ২৭ নভেম্বর রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় বনানীর আর্মি স্টেডিয়ামে।
শুরুতেই মুনমুন আহমেদ ও তাঁর দল ‘রেওয়াজ’ দলীয় কত্থক নৃত্য পরিবেশন করেন। কত্থক পরিবেশনায় অংশ নেন ঐশ্বরিয়া রহমান, আনিসা আইরিন আহমেদ, অবন্তিকা আলরেজা, লাভা বিশ্বাস, মাহিমা মেহনাজ আনাম, মাইশা মালিহা খান, মাসুম হুসেন, মো: শামীম আশরাফ, নুসরাত ফাতিমা খান, পারিমিতা রহমান, শারমিন সুহেলি খানম, শর্মিষ্ঠা সোনালিকা সরকার, শিশির বিন্দু বিশ্বাস, সৌদামনি মজুমদার, উজমা সামাদ, জেরিন তাসফিহ্‌, রেশমা, কাজী তানিসা জামান, রূপকথা চৌধুরী। মুনমুন আহমেদ ও তাঁর দল ‘ভিন্ন ষড়জে’ গুরুবন্দনার মধ্য দিয়ে শুরু করেন পরিবেশনা। এরপর তিন অংশে ত্রিতালে কত্থক পরিবেশন করেন তারা। নৃত্যের সঙ্গে কণ্ঠে সহযোগিতা করেন তানজিলা করিম স্বরলিপি। বাঁশিতে ছিলেন মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, সরোদে সুনন্দ মুখার্জী, এস্রাজে অসিত বিশ্বাস, তবলায় সুবীর ঠাকুর এবং আবৃত্তিতে অপরাজিতা মুস্তফা ও অহিদুজ্জামান।
পরিবেশনা শেষে শিল্পীদের হাতে উৎসবের স্মারক তুলে দেন প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ইনাম আহমদ চৌধুরী।

পরবর্তী পরিবেশনা ছিল নীলেশ রণদেবের। তিনি তবলায় তিনতাল বাজিয়ে মুগ্ধ করেন দর্শকদের। হারমোনিয়াম সহযোগিতায় ছিলেন মিলিন্দ কুলকার্নি।
পরিবেশনা শেষে শিল্পীর হাতে উৎসবের স্মারক তুলে দেন বিবেকানন্দ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক এ করিম।

চতুর্থ দিনের তৃতীয় পরিবেশনায় জয়তীর্থ মেউন্ডি রাগ শুদ্ধ কল্যাণ, আদানা ও নাট্যগীত-এ খেয়াল পরিবেশন করে শোনান। তাঁর সঙ্গে তবলায় ছিলেন আজিঙ্কা যোশি ও হারমোনিয়ামে মিলিন্দ কুলকার্নি।
পরিবেশনা শেষে শিল্পীকে উৎসব স্মারক দিয়ে সম্মানিত করেন বাণিজ্যসচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন।
পরবর্তী পরিবেশনায় যুগলবন্দি তবলায় দর্শকদের মাতান পণ্ডিত যোগেশ শামসি ও পণ্ডিত শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। তারা তিনতাল পরিবেশন করেন। হারমোনিয়ামে ছিলেন অজয় যোগলেকার।
পরিবেশনা শেষে শিল্পীদের হাতে উৎসব স্মারক তুলে দেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদিক।

চতুর্থ দিনের আয়োজনে যুগলবন্দিতে কর্ণাটকি কণ্ঠসংগীত পরিবেশন করেন রঞ্জনী ও গায়ত্রী। তাঁরা একে একে গেয়ে শোনান নাটাই-স্বরস্বতি, ত্যাগ রাজের কম্পোজিশনে রাগ পন্তুবরালি, তামিল কম্পোজিশনে রাগ মুখারি এবং রাগ খাম্বাজ (রাগাম তালাম পল্লবী) ও আদি তালাম। শিল্পী ভগ্নিদ্বয় তাদের পরিবেশন শেষ করেন বিটোভা চালা (রাগমালা) দিয়ে। যু্গলবন্দি কণ্ঠসংগীতের সঙ্গে বেহালায় ছিলেন চারুমতি রঘুরমন, মৃদঙ্গমে ছিলেন কে সাই গিরিধর, ঘটম-এ ছিলেন চন্দ্রশেখর শর্মা।
পরিবেশন শেষে শিল্পীবৃন্দকে উৎসবের সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা জনাব এইচ টি ইমাম।
এরপর সরোদ পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে আসেন পণ্ডিত তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদার। প্রথমে রাগ গুঞ্জি কানাড়া দিয়ে শুরু করেন তিনি। পরে একে একে বাজিয়ে শোনান আলাপ জোড় ঝালা ও বিলম্বিত তিনতালে গৎ। শেষে রাগ যোগিয়া কালিংগ্রা বাজিয়ে শেষ করেন পরিবেশনা। সরোদ গুরুর সঙ্গে তবলায় তাল দেন পণ্ডিত যোগেশ শামসি। পরিবেশনা শেষে গুণী এই শিল্পীর হাতে উৎসবের সম্মাননা স্মারক তুলে দেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
চতুর্থ দিনের সর্বশেষ পরিবেশনা ছিল পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর খেয়াল। তিনি রাগ বিলাসখনি তরী ও কুন্তল বাড়ালি পরিবেশন করেন। সবশেষে রাগ ভৈরবীতে ভজন পরিবেশন করে শেষ করেন তাঁর পরিবেশনা। তবলায় ছিলেন সৌমেন সরকার, তানপুরায় অভিজিৎ কুণ্ডু ও হারমোনিয়ামে অজয় যোগলেকার।
পরিবেশনা শেষে শিল্পীকে উৎসব স্মারক প্রদান করেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান জনাব আবুল খায়ের।
আগামীকাল উৎসবের পঞ্চম ও শেষ দিনের আয়োজন শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টায়। শেষ দিন আনুষ্ঠানিক সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপারসন স্যার ফজলে হাসান আবেদ। বিশেষ অতিথি থাকবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন সম্মানিত শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এমেরিটাস ড. আনিসুজ্জামান। মঞ্চে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত থাকবেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মান্যবর মেয়র আনিসুল হক এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মান্যবর মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।
আগামীকাল যাদের পরিবেশনা থাকছে তারা হলেন- সংগীত বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয় (দলীয় কণ্ঠসংগীত), বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ (দলীয় সেতার), পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা (সন্তুর), কুমার মারদুর (খেয়াল), পণ্ডিত কুশল দাস (সেতার), আরতী আঙ্কালিকর (খেয়াল) এবং পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া (বাঁশি)।

সংগীত উপভোগের পাশাপাশি শ্রোতাদের জন্য খাবার ও পানীয়ের ব্যবস্থা রয়েছে উৎসব প্রাঙ্গণে। এছাড়া বিভিন্ন স্টলে পাওয়া যাবে আইস মিডিয়ার ম্যাগাজিন ও বেঙ্গল পাবলিকেশনসের বই। রয়েছে ডেইলি স্টার বুকস ও প্রথমা। এছাড়া অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণে আরও রয়েছে অরণ্য, বেঙ্গল ক্রিয়েশনস, ম্যাংগো মোবাইল, বেঙ্গল ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেকচার, ল্যান্ডস্কেপ ও সেট্‌লমেন্ট এর প্রদর্শনী ‘আগামীর ঢাকা’। আছে ব্র্যাক ব্যাংকের এটিএম বুথ। সাংবাদিকদের জন্য থাকছে ওয়াইফাই জোন।
বেঙ্গল ফাউন্ডেশন আয়োজতি বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব ২০১৬-এর নিবেদক স্কয়ার গ্রুপ। আয়োজন সর্মথন করছে ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড। অনুষ্ঠানে সম্প্রচার সহযোগী মাছরাঙা টেলিভিশিন। মিডিয়া পার্টনার আইস বিজনেস টাইমস। আতিথেয়তা সহযোগী র‍্যাডিসন হোটেল। সার্বিক সহযোগিতায় বেঙ্গল গ্রুপ। অনুষ্ঠান আয়োজিত হচ্ছে বেঙ্গল ডিজিটাল, ম্যাংগো, বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয় ও পারফেক্ট হারমনি প্রোডাকশনস্ সিঙ্গাপুরের সহযোগিতায়। ইভেন্ট ব্যবস্থাপনায় ব্লুজ কমিউনিকেশনস।
গত চার বছর ধরে আয়োজিত ‘বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব’ শিল্পী ও দর্শকের অংশগ্রহণের নিরিখে এরই মধ্যে এই উপমহাদেশে তথা বিশ্বে র্সবাধিক বড় পরসিরে উচ্চাঙ্গসংগীতের আসর হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এ বছর উৎসবটি উৎর্সগ করা হয়েছে সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের (১৯৩৫-২০১৬) স্মৃতির উদ্দেশ্যে।
ছবিঃ বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সৌজন্যে

thumbnail From Left: Yogesh Samsi and Pandit Tejendra Narayan Majumdar

thumbnail Pandit Ajoy Chakrabarty

thumbnail Ranjani and Gayatri

thumbnail Pandit Ajoy Chakrabarty

thumbnail Pandit Tejendra Narayan Majumdar