Menu

আবার বসছে শাস্ত্রীয় সংগীতের মহাযজ্ঞ

thumbnail

উপমহাদেশের প্রখ্যাত শিল্পীদের সুর ও নৃত্যের ইন্দ্রজাল উপভোগের সুযোগ এলো আবার। কণ্ঠ ও যন্ত্রে ধ্রুপদ, খেয়াল, তারানা, ঠুমরি, ভজন, চৈতি, দাদরাসহ অন্যান্য শাস্ত্রীয় সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের শিল্পীরা মাতাবেন দর্শক-শ্রোতার মনপ্রাণ। পাশাপাশি চলবে শাস্ত্রীয় নৃত্যের ঝংকার। পঞ্চমবারের মতো রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে শুরু হতে যাচ্ছে শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্যের মহাযজ্ঞ।

আগামী ২৪ নভেম্বর পর্দা উঠবে এ উৎসবের। এদিন সন্ধ্যা ৭টায় সূচনা হবে পাঁচ দিনের উৎসবটির। চলবে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত চলবে সুর-তাল ও লয়ের খেলায় বৈচিত্র্যময় ধ্রুপদী পরিবেশনা। দর্শক-শ্রোতার সংখ্যার বিচারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় উচ্চাঙ্গসংগীত আসরের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত উৎসবটি এ বছর উৎসর্গ করা হয়েছে সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হককে। পঞ্চমবারের মতো স্কয়ার নিবেদিত এ উৎসবের আয়োজক বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। সহযোগিতায় রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক। গতকাল সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে এক জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠিতব্য উৎসবের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু হবে উৎসবে অংশগ্রহণের নিবন্ধন কার্যক্রম। অনুষ্ঠানে উৎসবের নিয়মাবলি তুলে ধরেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী। বক্তব্য দেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের, উপদেষ্টা আবদুল মোমেন, মাছরাঙা টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী ও ব্র্যাক ব্যাংকের হেড অব কমিউনিকেশনস জারা মাহবুব।

আসছেন খ্যাতিমান শিল্পীরা : এবারের উৎসবে অংশ নিচ্ছেন বেনারস ঘরানার পদ্মবিভূষণপ্রাপ্ত ৮৭ বছরের প্রবাদপ্রতিম শিল্পী বিদুষী গিরিজা দেবী। উৎসবের প্রবীণতম এই শিল্পী খেয়াল, ঠুমরি ও টপ্পার পরিবেশনায় ছড়াবেন পুরব অঙ্গের রূপ-রস। প্রথম দিনের পরিবেশনায় অংশ নেবেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্ম নেওয়া কিংবদন্তি শিল্পী আলাউদ্দিন খাঁর বংশধর ওস্তাদ আশিষ খাঁ। এবারের উৎসবে প্রাধান্য পাবে নবীন শিল্পীদের উপস্থিতি ও একাধিক যৌথ পরিবেশনা। পুরুষ ও নারী কণ্ঠের ভিন্নস্তরের রাগে পরিবেশিত জাসরাঙ্গি শীর্ষক যুগলবন্দি পরিবেশনায় অংশ নেবেন জয়পুর আত্রোলির বিদুষী অশ্বিনী ভিদে ও মেওয়াতি ঘরানার পণ্ডিত সঞ্জীব অভয়ংকর। উৎসবের প্রথম দিন পশ্চিমা ঢঙে বেহালা বাজিয়ে শোনাবেন পদ্মভূষণপ্রাপ্ত ড. এল সুব্রহ্মণ্যন। প্রেরণাসঞ্চারী ওড়িশি নৃত্যের আশ্রয়ে মঞ্চ আলোকিত করবেন বিদুষী মাধবী মুডগাল ও তাঁর শিষ্যা আরুশি মুডগাল। এ উৎসবে প্রথমবারের মতো শোনা যাবে ম্যান্ডোলিনের সুর। বাঁশি ও ম্যান্ডোলিনের যুগলবন্দি পরিবেশন করবেন গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত শিল্পী বংশীবাদক রনু মজুমদার ও ইউ রাজেশ।

thumbnail

বিগত বছরের মতো এবারও অনন্য এই সংগীতায়োজনে অংশ নেবেন প্রবাদপ্রতিম বাঁশরিয়া পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া। শোনা যাবে পণ্ডিত শিবকুমার শর্মার মোহনীয় সন্তুরের সুর। কণ্ঠসংগীত ও বাদ্যের নানা পরিবেশনা নিয়ে হাজির হবেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, পণ্ডিত উলহাস কশলকর, ওস্তাদ রশিদ খান, পণ্ডিত কুশল দাস, পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার ও পণ্ডিত উদয় ভাওয়ালকার। শোনা যাবে বিশিষ্ট সেতারির পণ্ডিত সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের মিষ্টি-মধুর সেতারের বাজনা। থাকবে পদ্মভূষণপ্রাপ্ত কিরানা ঘরানার কোকিলকণ্ঠী শিল্পী ড. প্রভা আত্রে এবং ফরুক্কাবাদ ঘরানার খ্যাতিমান তবলিয়া পণ্ডিত অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ছেলে অনুব্রত চট্টোপাধ্যায়ের পরিবেশনা। বাঁশি ও বেহালার যুগলবন্দি পরিবেশনায় রং ছড়াবেন প্রবীণ গোধকিণ্ডি ও রাতিশ টাগডের। যৌথ তবলাবাদনে অংশ নেবেন পণ্ডিত যোগেশ শামসীয় পণ্ডিত শুভংকর বন্দ্যোপাধ্যায়।

উৎসবে অংশগ্রহণের নিয়ম : প্রতিবছরের মতো অনলাইনে নিবন্ধনের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে হবে প্রবেশ পাস। নভেম্বরের শুরু থেকে সীমিত সময়ের জন্য চলবে এই নিবন্ধন কার্যক্রম। অনলাইনের বাইরে ধানমণ্ডির ৭/এ সড়কের ৬০ নম্বর বাড়ির জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক বিদ্যাপীঠ এবং এয়ারপোর্ট রোডের খিলক্ষেতের বেঙ্গল সেন্টারে সরাসরি নিবন্ধন করা যাবে। কোনো ধরনের ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না উৎসব আঙিনায় এবং থাকবে না গাড়ি পার্কিয়ের সুবিধা। উৎসব শুরুর প্রথম দুই দিন পর্যন্ত অফসাইট নিবন্ধন চললেও তৃতীয় দিন থেকে এ সুযোগ থাকবে না। প্রতিদিন রাত ১টায় বন্ধ হয়ে যাবে উৎসবের প্রবেশপথ। ভোরে আর্মি স্টেডিয়াম থেকে ফেরার জন্য বাস থাকবে নির্দিষ্ট রুটে।

View Full Article