উচ্চাঙ্গসঙ্গীত উৎসবে আজ রাতের তারকারা
আজ ‘বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসঙ্গীত উৎসব-২০১৬’-এর চতুর্থদিন। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের বর্ণাঢ্য এ আসরে আজ দলীয় কত্থক নৃত্য পরিবেশন করবেন বাংলাদেশের নৃত্যশিল্পী ও শিক্ষক মুনমুন আহমেদ ও তার দল রেওয়াজ। তবলা যুগলবন্দি পরিবেশনায় থাকছে পণ্ডিত যোগেশ শামসি ও পণ্ডিত শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়. কর্ণাটক কণ্ঠসঙ্গীত যুগলবন্দি পরিবেশনায় অংশ নেবেন রঞ্জনী ও গায়ত্রী। সারোদ বাজাবেন পণ্ডিত তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদার, খেয়াল শোনাবেন জয়তীর্থ মেউন্ডি, পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী। এ ছাড়াও থাকছে নীলেশ রণদেব, তবলায় আজিঙ্কা যোশির পরিবেশনা
পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী
শৈশব থেকেই অজয় চক্রবর্তীর বিরল প্রতিভার বিকাশ ঘটে। তার হাতেখড়ি বাবা অজিত চক্রবর্তীর কাছে। নিবিড় প্রশিক্ষণ ও স্বীয় অধ্যবসায়ের গুণে অজয় চক্রবর্তী পাতিয়ালা-কসুর ঘরানা ছাড়াও অন্যান্য প্রধান ঘরানার বৈশিষ্ট্য রপ্ত করতে সমর্থ হন। পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী পদ্মশ্রী, বঙ্গ বিভূষণসহ অসংখ্য স্বীকৃতি পেয়েছেন।
পণ্ডিত তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদার
সরোদিয়া পণ্ডিত তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদারের হাতেখড়ি পিতামহ বিভূতিরঞ্জন মজুমদারের কাছে। গভীর সঙ্গীতজ্ঞান ও কৌশলগত দক্ষতা এবং ধ্রুপদ, তন্ত্রকারী ও বিভিন্ন গায়কীর উপাদানে সমুজ্জ্বল তার পরিবেশনা। রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক, পণ্ডিত ডিভি পালুস্কার পুরস্কারসহ অনেক সম্মাননা পেয়েছেন। ঢাকার বেঙ্গল পরম্পরা সঙ্গীতালয়ের একজন গুরু তিনি।
পণ্ডিত যোগেশ শামসি
যোগেশ শামসি তার বাবা প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী পণ্ডিত দিনকার কৈকিনীর কাছেই সঙ্গীতে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। তবে প্রবাদপ্রতিম তবলিয়া ওস্তাদ আল্লা রাখার কাছেই তার প্রতিভার বিকাশ ঘটে। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সব নামিদামি কণ্ঠ ও যন্ত্রশিল্পীর সঙ্গে তিনি তবলায় সঙ্গত করে প্রভূত সুনাম অর্জন করেছেন। সফল বাদক ছাড়াও তিনি একজন পরম শ্রদ্ধেয় শিক্ষক। পশ্চিমা বিশ্বে শিক্ষার্থীদের জন্য সহায়িকাস্বরূপ তবলা শিক্ষার একটি পাঠ্যক্রম রচনা করেছেন। শামসি গুরুমুখী ঐতিহ্যের ধারক এবং নিজস্ব বাদন শৈলীতে বজায় রেখেছেন।
পণ্ডিত শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
বিশিষ্ট তবলাবাদক শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় পণ্ডিত স্বপনশীবের তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণ শুরু করেন। পরবর্তীকালে তিনি অন্যান্য ঘরানার বাদনশৈলীও রপ্ত করেন। তীক্ষষ্ট সাঙ্গীতিক বোধ তার বাদনকে অনন্য করে তুলেছে। পণ্ডিত রবিশঙ্কর, জন ম্যাকলফলিন, ওস্তাদ রশিদ খান, ওস্তাদ আমজাদ আলি খান, পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া, পণ্ডিত শিব কুমার শর্মা, ড. এল সুব্রহ্মণ্যন, ড. বালমুরালি কৃষ্ণ, পণ্ডিত যশরাজ, এমএস গোপাল কৃষ্ণন, পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীসহ বহু স্বনামধন্য শিল্পীর সঙ্গে দেশ-বিদেশে তবলা পরিবেশন করে সুনাম অর্জন করেছেন।
নীলেশ রণদেব
পণ্ডিত সুরেশ তালওয়ালকারের সযত্ন তালিমে নীলেশ রণদেব তবলা বাদনে পারদর্শী হয়ে উঠেছেন। ভারত ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গুণী শিল্পীদের সঙ্গে সঙ্গীতসভায় তবলা বাজিয়েছেন কৃতিত্বের সঙ্গে। তিনি অনেক সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।
জয়তীর্থ মেউন্ডি
জয়তীর্থ মেউন্ডি কিরানা ঘরানার কৃতী কণ্ঠশিল্পী। সঙ্গীতে হাতেখড়ি মায়ের কাছে। পরে পণ্ডিত অর্জুন সানাকোড় ও শ্রীপতি পেদেগারের কাছে তিনি শিক্ষা গ্রহণ করেন। অনায়াসগায়ন ও বৈচিত্র্যপূর্ণ তানকারী তাকে বিশিষ্ট করে তুলেছেন। জয়তীর্থ ইতিমধ্যে ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সঙ্গীত পরিবেশন করে সুনাম অর্জন করেছেন। তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে ‘ইয়াংমায়েস্ত্রো ইন মিউজিক’ পুরস্কার গ্রহণ করেন। এ ছাড়া পণ্ডিত যশরাজ গৌরব পুরস্কার, পণ্ডিত বাসবরাজ রাজগুরু পুরস্কার ও আদিত্য বিরলা সঙ্গীত কলা কিরণ পদকও অর্জন করেন।
রঞ্জনী ও গায়ত্রী
রঞ্জনী ও গায়ত্রী বালসুব্রহ্মণ্যন ভগি্নদ্বয় প্রতিষ্ঠিত কর্ণাটকি কণ্ঠশিল্পী ও বেহালা বাদক জুটি। অল্প বয়সেই সঙ্গীত শিক্ষা শুরু হয় সম্মুখানন্দ সঙ্গীত বিদ্যালয়ে অধ্যাপক টিএস কৃষ্ণ স্বামীর কাছে। একক ও যুগল পরিবেশনা উভয়েই তাদের মুনশিয়ানার ছাপ রয়েছে। ড. বালমুরালি কৃষ্ণ ও টি বিশ্বনাথনসহ অন্যান্য বিশিষ্ট শিল্পীর সঙ্গে তারা মঞ্চভাগ করে নিয়েছেন। রঞ্জনী ও গায়ত্রী তাদের পরিবেশনার জন্য বিভিন্ন পদক এবং খেতাবে ভূষিত হয়েছেন। তাদের ত্যাগ ব্রাহ্মণরা সভার বাণীকলা সুধাকর পুরস্কার, কল্কি কৃষ্ণমূর্তি স্মৃতি পুরস্কারসহ তারা অনেক সম্মাননা অর্জন করেছেন।