উচ্চাঙ্গসঙ্গীত উৎসবে আজ রাতের তারকারা
আজ ‘বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসঙ্গীত উৎসব ২০১৬’-এর তৃতীয় দিন। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের বর্ণাঢ্য এই আসরে আজ বাঁশি শোনবেন শশাঙ্ক সুব্রহ্মণ্যন। খেয়াল ওস্তাদ রাশিদ খান ও প্রভা আত্রে। প্রতাপ আওয়াদের পাখাওয়াজ বাদনের সঙ্গে ধ্রুপদ পরিবেশন করবেন পণ্ডিত উদয় ভাওয়ালকার। আরও থাকছে পরিমল চক্রবর্তীর তবলার সঙ্গে পণ্ডিত সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেতার বাদন। পণ্ডিত অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, সত্যজিৎ তালওয়ালকার, অনুব্রত চট্টোপাধ্যায় ও রোহিত আত্রের তবলা বাদন ছাড়াও থাকছে বেঙ্গল পরম্পরার সঙ্গীতালয়ের শিক্ষার্থীদের দলীয় সরোদ পরিবেশনা।
শশাঙ্ক সুব্রহ্মণ্যন
কর্ণাটকি সঙ্গীতরীতির একজন বিশিষ্ট বংশীবাদক শশাঙ্ক সুব্রহ্মণ্যন। বাবা সুব্রহ্মণ্যনের কাছে তার হাতেখড়ি। এ ছাড়া তিনি আর কে শ্রীকান্তন, পালঘাট কে ভি নারায়ণস্বামী ও পণ্ডিত যশরাজের কাছে তালিম নিয়েছেন। ভারতে ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জন ম্যাক্লফ্লিন, পাকো দ্য লুচ্যা, জাকির হোসেন, সুলতান খান, বিশ্বমোহন ভট, অজয় চক্রবর্তীসহ শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের বহু স্বনামধন্য শিল্পীর সঙ্গে বাঁশি বাজিয়েছেন।
প্রভা আত্রে
ভারতীয় ধ্রুপদী সঙ্গীতের স্বনামধন্য শিল্পী ড. প্রভা আত্রে। কিরানা ঘরানার তিনি অন্যতম অগ্রজ গায়ক। প্রবাদপ্রতিম ওস্তাদ আমির খান ও ওস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খাঁর গান তাকে দারুণ প্রভাবিত করলেও নিজস্ব উদ্ভাবন ও সৃজনে তিনি গড়ে তোলেন স্বতন্ত্র গায়নশৈলী যা সঙ্গীত জগতে তাকে উচ্চাসনে অধিষ্ঠিত করে। ড. আত্রে খেয়াল, ঠুমরি, দাদরা, গজল ও নাট্যসঙ্গীতে সমান পারঙ্গম। বহু সম্মাননা ও পুরস্কারের মধ্যে অন্যতম ভারত সরকারের কাছ থেকে প্রাপ্ত পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ, কালিদাস সম্মাননা, সঙ্গীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার ও ঠাকুর আকাদেমি রত্ন পদক।
অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়
পণ্ডিত অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় স্বনামধন্য তবলাবাদক। ভারতে ও বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে তবলা পরিবেশন করে দর্শক-সমালোচকের আনুকূল্য লাভ করেছেন। যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমনসে তিনিই প্রথম ভারতীয় শিল্পী, যিনি তবলা পরিবেশন করেন। সঙ্গীতে তার অবদানের জন্য রাষ্ট্রপতি পদক এবং সঙ্গীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন।
উদয় ভাওয়ালকর
শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সনাতন ধারা ধ্রুপদের বিশিষ্ট শিল্পী উদয় ভাওয়ালকর। ধ্রুপদ সঙ্গীতের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার পেছনে তার অবদান রয়েছে। স্বনামধন্য ধ্রুপদিয়া জিয়া ফরিদউদ্দিন ডাগর ও জিয়া মহিউদ্দিন ডাগরের কাছে গুরু-শিষ্য পরম্পরা পদ্ধতিতে দীর্ঘ ১২ বছর গুরুগৃহে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন উদয় ভাওয়ালকর। ঢাকার বেঙ্গল পরম্পরা সঙ্গীতালয়ে তিনি গুরু।
সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সেতারবাদক পণ্ডিত সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় একাধারে গুরু ও প্রশিক্ষক। বাবা পীযূষপ্রসন্ন বন্দ্যোপাধ্যায়, পণ্ডিত বিমলেন্দু মুখোপাধ্যায়, পণ্ডিত মানস চক্রবর্তী, ড. এমআর গৌতম এবং প্রখ্যাত সরোদিয়া পণ্ডিত রাধিকামোহন মৈত্রের কাছে তিনি বিভিন্ন সময়ে তালিম নেন। বাদনে স্বতঃস্ফূর্ততা তার সঙ্গীতশৈলীকে বিশিষ্ট করে তুলেছে। ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সেতার পরিবেশন করেছেন।
পরিমল চক্রবর্তী
বাবা নিখিল চন্দ্র চক্রবর্তীর কাছে তবলায় হাতেখড়ি পরিমল চক্রবর্তীর। পরবর্তীকালে তিনি পণ্ডিত রামধ্রুবে, পণ্ডিত শংকর ঘোষ ও পণ্ডিত জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের কাছে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। পরিমল চক্রবর্তী এ পর্যন্ত ভারতসহ বিভিন্ন দেশে বহু গুণী শিল্পীর সঙ্গে তবলায় সঙ্গত করেছেন।
রাশিদ খান
রাশিদ খান ভারতের একজন অন্যতম খেয়ালিয়া। তার গায়নে বিশেষত্বের ছাপ রেখেছেন বিলম্বিত আলাপের আবেগময়তায়, বিস্তারের গভীরতায় ও তানকারীর ব্যতিক্রমী দক্ষতায় ও ব্যঞ্জনে।
শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
তবলাবাদক শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় পণ্ডিত স্বপন শিবের তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণ শুরু করেন। পরবর্তীকালে তিনি অন্যান্য ঘরানার বাদনশৈলীও রপ্ত করেন। তীক্ষষ্ট সাঙ্গীতিক বোধ তার বাদনকে অনন্য করে তুলেছে। পণ্ডিত রবিশঙ্কর, জন ম্যাক্লফ্লিন, ওস্তাদ রাশিদ খান, ওস্তাদ আমজাদ আলি খান, পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া, পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা, ড. এল সুব্রহ্মণ্যন, ড. বালমুরালি কৃষ্ণ, পণ্ডিত যশরাজ, এমএস গোপাল কৃষ্ণ, পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীসহ বহু স্বনামধন্য শিল্পীর সঙ্গে তবলা পরিবেশন করে সুনাম অর্জন করেছেন।
বেঙ্গল পরম্পরা সঙ্গীতালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ
মো. কামাল জহির শামীম, খন্দকার শামছুজোহা, মো. ইলিয়াস খান, ইলহাম ফুলযুরী খান, ইশরা ফুলযুরী খান, শরীফ মুহাম্মাদ আরিফিন রনি, আল জোনায়েদ দিদার।