Menu

খেয়ালের মোহময় টানে..

তৃতীয় দিনের শেষ পরিবেশনা ছিল ওস্তাদ রাশিদ খানের। শুরুতে রাগ ললিত পরিবেশন করেন। বিখ্যাত  ঠুমরি ‘ইয়াদ পিয়া কি আয়ি’র মাধ্যমে তিনি শেষ করেন পরিবেশনা। তার সঙ্গে তবলায় তাল দেন পণ্ডিত শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোকালে ছিলেন কৃষ্ণা বোগানে, হারমোনিয়াম অজয় যোগলেকার, সারঙ্গিতে মুরাদ আলী খান এবং তানপুরায় এলভিন মজুমদার ও সামিন ইয়াসার।

চতুর্থ দিন দলীয় কত্থক নৃত্য নিয়ে মঞ্চে ওঠেন মুনমুন আহমেদ ও তার দল ‘রেওয়াজ’। এর পর থাকে তবলা পরিবেশনা। শুরুতে পরিবেশনা নিয়ে আসেন নীলেশ রণদেব। এর পর খেয়াল পরিবেশন করতে মঞ্চে আসেন জয়তীর্থ মেউন্ডি, তাকে তবলায় সহযোগিতা করেন আজিঙ্কা যোশি। পণ্ডিত যোগেশ শামসি ও পণ্ডিত  শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের তবলা যুগলবন্দির পর কর্ণাটক কণ্ঠসংগীত যুগলবন্দি পরিবেশন করেন রঞ্জনী ও গায়ত্রী। পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদারের সরোদের সঙ্গে মঞ্চে তবলায় ছিলেন পণ্ডিত যোগেশ শামসি। স্বনামধন্য সরোদিয়া পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদারের হাতেখড়ি পিতামহ বিভূতিরঞ্জন মজুমদারের কাছে। পরবর্তীকালে বাবা রঞ্জন মজুমদারের কাছে এবং ওস্তাদ বাহাদুর খান, পণ্ডিত অমরেশ চৌধুরী, অনীল পালিত, পণ্ডিত অজয় সিংহ রায়, ওস্তাদ আলি আকবর খান ও পণ্ডিত রবিশঙ্করের কাছে তিনি তালিম নেন।

রাত বাড়ছে, জমে উঠছে আর্মি স্টেডিয়ামের প্রতিটি পরিসর। এ সময় খেয়াল পরিবেশন করতে আসেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী। শ্রোতাদের অপেক্ষার ইতি ঘটল যেন তার আগমনের মাধ্যমে। শৈশব থেকেই অজয় চক্রবর্তীর বিরল সাংগীতিক প্রতিভার বিকাশ ঘটে। হাতেখড়ি পিতা অজিত চক্রবর্তীর কাছে। এর পর পণ্ডিত কানাইদাস বৈরাগী, ওস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খাঁর পুত্র ওস্তাদ মুনব্বর আলি খান এবং পণ্ডিত জ্ঞান প্রকাশ ঘোষের মতো প্রবাদপ্রতিম গুরুদের কাছে তালিম নেন। নিবিড় প্রশিক্ষণ ও স্বীয় অধ্যবসায়ের গুণে অজয় চক্রবর্তী পাতিয়ালা-কসুর ঘরানা ছাড়াও অন্যান্য প্রধান ঘরানার বৈশিষ্ট্য রপ্ত করতে সমর্থ হন। ১৯৭৮ সালে তিনি সেখানে প্রথম স্কলার হিসেবে যোগদান এবং পরবর্তীকালে সর্বকনিষ্ঠ গুরু হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গুরু ও বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য হিসেবে তিনি এখনো আইটিসি-সংগীত রিসার্চ একাডেমিতে বহাল আছেন। পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর পুরস্কার ও অর্জনের তালিকা দীর্ঘ। পদ্মশ্রী, আইটিসি-এসআরএ স্বর্ণপদক, সংগীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার, ৪৫ অনূর্ধ্ব সেরা সংগীতশিল্পী হিসেবে কুমার গান্ধর্ব পুরস্কার, আল্ভার ভিরাসাত পুরস্কার, বঙ্গ বিভূষণসহ অসংখ্য স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি।

২৮ নভেম্বর পঞ্চম দিনের উত্সব শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টায়। চলবে পরদিন ভোর ৫টা ১০ মিনিট পর্যন্ত। এতে অংশ নেবেন পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা (সন্তুর), কুমার মারদুর (খেয়াল), পণ্ডিত কুশল দাস (সেতার), আরতী আঙ্কালিকার (খেয়াল) ও পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া (বাঁশি)।