Menu

প্রস্তুত আবাহনী মাঠ, মহাযজ্ঞ শুরু আজ

thumbnail

মাঠটির দেয়াল ঘেঁষে তৈরি করা হয়েছে টিনের উঁচু দেয়াল। সুদৃশ্য গেট পেরিয়ে ভেতরে ঢুকতেই দেখা গেল কর্মীরা ছোটাছুটি করছে, রং লাগাচ্ছে। কেউ বা সাজাচ্ছে বসার চেয়ার। মাঠের এক কোণে পুরোপুরি প্রস্তুত মঞ্চ। ১৩০ ফুট বাই ৫০ ফুট প্রশস্ত মঞ্চটি আয়তনে যেমন বড়, তেমনই নান্দনিক। মঞ্চের সামনে বসার জন্য মাথার ঠিক ওপরে টানানো হয়েছে বিশাল ছাউনি। অন্যবার ছাউনি ছিল একটি। এবার দুটি। প্রতিটি ছাউনিতে বসতে পারবে সাত হাজার শ্রোতা। এবারের উৎসব আয়োজনের জন্য আর্মি স্টেডিয়ামের চেয়েও সুন্দর ও বৃহত্ভাবে সাজানো হয়েছে রাজধানীর ধানমণ্ডির শেখ কামাল আবাহনী মাঠ। নতুন ভেন্যুতে, নতুন আঙ্গিকে এই মাঠে আজ মঙ্গলবার পর্দা উঠছে বেঙ্গল  আয়োজিত উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের।

পৌষের শীত জেঁকে বসছে রাজধানীতে। শরীরে গরম কাপড় জড়িয়ে রাতভর উপমহাদেশের প্রখ্যাত শিল্পীদের সুরের ইন্দ্রজালে তন্ময় হয়ে থাকার সুযোগ এলো আবার। আজ সন্ধ্যা ৭টায় উৎসবের উদ্বোধন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এমপি, আবাহনী লিমিটেডের সভাপতি সালমান এফ রহমান এবং স্কয়ার গ্রুপের পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী।

উৎসবে কণ্ঠ ও যন্ত্রে ধ্রুপদ, খেয়াল, ঠুমরি, ভজন, দাদরাসহ অন্যান্য শাস্ত্রীয় পরিবেশনার মাধ্যমে খ্যাতিমান শিল্পীরা মাতাবেন দর্শক-শ্রোতাদের। পাশাপাশি চলবে শাস্ত্রীয় নৃত্যের লহরি। শীতের কুয়াশা ভেদ করে পঞ্চ রজনী সুরে সুরে ছড়িয়ে পড়বে শান্তির বার্তা। ছড়াবে সুরের ইন্দ্রজাল।

দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় শাস্ত্রীয় সংগীত ও ধ্রুপদী নৃত্যের এই মহাযজ্ঞে অংশ নিতে ঢাকায় আসতে শুরু করেছেন বিশ্ববরেণ্য শিল্পীরা। উৎসব চলবে টানা ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হয়ে ভোর ৫টা পর্যন্ত চলবে পরিবেশনা। এবারও কীর্তিমান শিল্পীদের ঐন্দ্রজালিক পরিবেশনা উপভোগের সুযোগ মিলছে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে।

গতকাল সোমবার আবাহনী মাঠ ঘুরে দেখা যায়, উৎসবের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ঐতিহ্যবাহী এই মাঠ। আর্মি স্টেডিয়ামের মতো গ্যালারি নেই। কিন্তু বসার জন্য তৈরি করা হয়েছে ভ্রাম্যমাণ গ্যালারি। গোটা মাঠে ইট বিছানো হয়েছে। মাঠের দুই পাশে মোটা ত্রিপল দিয়ে ছাউনি তৈরি করা হয়েছে। এ বছর নারী ও পুরুষের জন্য তৈরি করা হয়েছে ভিন্ন ৫০টি টয়লেট। বাড়ানো হয়েছে খাবারের স্টলও। সর্বোপরি আনন্দদায়ক উৎসবের জন্য প্রস্তুত আবাহনী মাঠ।

মাঠ প্রস্তুতের কাজ তদারকি করছিলেন ব্লুজ কমিউনিকেশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরহাদুল ইসলাম। আলাপচারিতায় তিনি বললেন, ‘মোটামুটি সব কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অন্যবারের চেয়ে এবার সুযোগ-সুবিধাও বাড়ানো হয়েছে। পর্যাপ্ত প্রবেশ গেট, টয়লেট, খাবারের স্টল বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি বৃদ্ধি করা হয়েছে নিরাপত্তাব্যবস্থাও।’

আয়োজকরা জানান, সারা মাঠে থাকবে দেড় শ সিসি ক্যামেরা। বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থা এজিস ও পুলিশ ছাড়াও নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন বিশেষ বাহিনীর সদস্যরা। মাঠের চারদিকে থাকবে পুলিশ ও বিশেষ বাহিনীর কড়া নজরদারি। সব মিলিয়ে স্বস্তিদায়ক পরিবেশে শ্রোতারা উপভোগ করতে পারবে বিখ্যাত শিল্পীদের পরিবেশনা।

উৎসব শুরু হবে পাশ্চাত্যের ধ্রুপদী ধারার সংগীত দিয়ে। আর উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়ার বাঁশির সুরে। এর মাঝে আছে সেতার, সরোদ, খেয়াল, ধ্রুপদ, নৃত্যসহ নানা পরিবেশনা। উৎসবের প্রথম দিন আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় কাজাখস্তান থেকে আসা ৫৮ সদস্যের আস্তানা সিম্ফনি ফিলহারমানিক অর্কেস্ট্রার সঙ্গে গ্র্যামি মনোনীত প্রখ্যাত বেহালাশিল্পী পদ্মভূষণ ড. এল সুব্রামনিয়ামের যুগলবাদন পরিবেশিত হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে থাকবে সরোদ বাদন : রাজরূপা চৌধুরী, খেয়াল পরিবেশনা : বিদুষী পদ্মা তালওয়ালকর, সেতার বাদন : ফিরোজ খান।

 

View Full Article