Menu

বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব ২৪ নভেম্বর শুরু

thumbnail

আগামী ২৪ নভেম্বর থেকে ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে পাঁচ রজনীর বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব ২০১৬।
উৎসবে যেমন থাকবে ৮৭ বছরের শিল্পীর পরিবেশনা, তেমনি থাকছে সাত বছরের খুদে শিল্পী প্রতিভার প্রকাশ।

দর্শক-শ্রোতার সংখ্যার বিচারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় উচ্চাঙ্গসংগীত আসরের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত উৎসবটি এ বছর উৎসর্গ করা হয়েছে সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হককে। পঞ্চমবারের মতো স্কয়ার নিবেদিত এ উৎসবের আয়োজক বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। সহযোগিতায় রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক
সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠেয় উৎসবের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়। পাঁচ দিনের উৎসবটির সূচনা হবে ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যা সাতটায়। চলবে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন সন্ধ্যা সাতটা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত চলবে সুর-তাল ও লয়ের খেলায় বৈচিত্র্যময় ধ্রুপদি পরিবেশনা। নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু হবে

উৎসবে অংশগ্রহণের নিবন্ধন কার্যক্রম।

উৎসবের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী। বক্তব্য দেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের, উপদেষ্টা আবদুল মোমেন, মাছরাঙা টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী ও ব্র্যাক ব্যাংকের হেড অব কমিউনিকেশনস জারা মাহবুব।

আবুল খায়ের বলেন, এ দেশের শাস্ত্রীয় সংগীতের হারানো ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে নবজাগরণ সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০১২ সাল থেকে এ উৎসবের সূচনা। ইতিমধ্যে বিশাল পরিসরের এ আসরটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশেষ গুরুত্ববহ হয়ে উঠেছে। তবে নানা পরিস্থিতির কারণে এ বছরের আয়োজন নিয়ে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছিল। তবে সরকারি উদ্যোগ ও আগ্রহ এবং বিভিন্ন মহলের অঙ্গীকার দূর করে দিয়েছে সেই শঙ্কা। তিনি আরও বলেন, শুদ্ধ সংগীতের ক্ষেত্রে ভালো লাগাটাই হচ্ছে বড় বিষয়। তাই উচ্চাঙ্গের এই সংগীতধারায় সবকিছুই যে বুঝতে হবে, এমন কোনো কথা নেই।

thumbnail

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, সংগীতের মাধ্যমে চিত্তের বিকাশ ঘটিয়ে গড়ে তুলতে হবে আলোকিত মানুষ। আর আলোকিত মানুষ তৈরির মাধ্যমে মৌলবাদমুক্ত অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়া সহজ হবে। সংবাদ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক বক্তৃতার আগে বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের শিক্ষার্থীরা সংগীত পরিবেশন করেন।

দেশের শিল্পীদের পরিবেশনা

উৎসবের অংশ নেবেন বাংলাদেশের ১৬৫ জন শিল্পী। উদ্বোধনী পর্বে নৃত্যশিল্পী শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচনা ও নির্দেশনায় নৃত্যনন্দন দলের প্রায় ষাটজন শিল্পী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূল গান ও ভাঙা গানে মণিপুরী, ভরত নাট্যম, ওডিশি ও কত্থক রীতির রূপায়ণ পরিবেশন করবেন। উৎসবের চতুর্থ দিনে কত্থক নৃত্য পরিবেশন করবেন মুনমুন আহমদ ও তাঁর দল। উৎসবের শেষ দিন প্রিয়াঙ্কা গোপের একক কণ্ঠের খেয়ালের সঙ্গে থাকবে তাঁর নির্দেশিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনা। উৎসবের দ্বিতীয় দিন মোহাম্মদ শোয়েবের নির্দেশনায় তাঁর শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করবেন পরীক্ষামূলক রাগসংগীত। এ ছাড়া উৎসবের বিভিন্ন দিনে সেতার, সরোদ ও তবলায় যন্ত্রসংগীত পরিবেশন করবেন বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের শিক্ষার্থীরা।

এবারের উৎসবের অংশ নিচ্ছেন বেনারস ঘরানার পদ্মবিভূষণপ্রাপ্ত ৮৭ বছরের প্রবাদপ্রতিম শিল্পী বিদুষী গিরিজা দেবী। উৎসবের প্রবীণতম এই শিল্পী খেয়াল, ঠুমরি ও টপ্পার পরিবেশনায় ছড়াবেন পূরব অঙ্গের রূপ-রস। প্রথম দিনের পরিবেশনায় অংশ নেবেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্ম নেওয়া কিংবদন্তি শিল্পী আলাউদ্দিন খাঁর বংশধর ওস্তাদ আশিষ খাঁ। এবারের উৎসবে প্রাধান্য পাবে নবীন শিল্পীদের উপস্থিতি ও একাধিক যৌথ পরিবেশনা। পুরুষ ও নারী কণ্ঠের ভিন্ন স্তরের রাগে পরিবেশিত জাসরাঙ্গি শীর্ষক যুগলবন্দী পরিবেশনায় অংশ নেবেন জয়পুর আত্রোলির বিদুষী অশ্বিনী ভিদে ও মেওয়াতি ঘরানার পণ্ডিত সমঞ্জীব অভয়ঙ্কর। উৎসবের প্রথম দিনে পশ্চিমা ও ঢংয়ে বেহালা বাজিয়ে শোনাবেন পদ্মভূষণপ্রাপ্ত এল সুব্রহ্মণ্যন। প্রেরণা সঞ্চারী ওডিশি নৃত্যের আশ্রয়ে মঞ্চ আলোকিত করবেন বিদুষী মাধবী মুদগাল ও তাঁর শিষ্যা আরুশি মুদগাল। এ উৎসবে প্রথমবারের মতো শোনা যাবে ম্যান্ডোলিনের সুর। বাঁশি ও ম্যান্ডোলিনের যুগলবন্দী পরিবেশন করবেন স্বামী অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত শিল্পী বংশীবাদক রনু মজুমদার ও ইউ রাজেশ।

thumbnail

বিগত বছরের মতো এবারও অনন্য এই সংগীতায়োজনে অংশ নেবেন প্রবাদপ্রতিম বাঁশরিয়া পণ্ডিত হরি প্রসাদ চৌরাসিয়া। শোনা যাবে পণ্ডিত শিবকুমার শর্মার মোহনীয় সন্তুরের সুর। কণ্ঠসংগীত ও বাদ্যের নানা পরিবেশনা নিয়ে হাজির হবেন পণ্ডিত অজয় চক্রবতী, পণ্ডিত উলহাস কশলকর, ওস্তাদ রশিদ খান, পণ্ডিত কুশল দাস, পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার ও পণ্ডিত উদয় ভাওয়ালকার।

কনিষ্ঠতম শিল্পী হিসেবে উৎসবে অংশ নেবে বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের শিক্ষার্থী ইসরাত ফুলঝুরি খান। সাত বছরের এই শিল্পী সেতার বাজিয়ে শোনাবে। প্রতিবছরের মতো অনলাইনে নিবন্ধনের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে হবে প্রবেশ পাস। নভেম্বরের শুরু থেকে সীমিত সময়ের জন্য চলবে এই নিবন্ধন কার্যক্রম।

উৎসবে অংশগ্রহণের নিয়মনীতি: প্রতিবছরের মতো অনলাইনে নিবন্ধনের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে হবে প্রবেশ পাস। নভেম্বরের শুরু থেকে সীমিত সময়ের জন্য চলবে এই নিবন্ধন কার্যক্রম। অনলাইনের বাইরে ধানমন্ডির ৭/এ সড়কের ৬০ নম্বর বাড়ির জ্ঞানতাপস আবদুর রাজ্জাক বিদ্যাপীঠ এবং এয়ারপোর্ট রোডের খিলক্ষেতের বেঙ্গল সেন্টারে সরাসরি নিবন্ধন করা যাবে। কোনো ধরনের ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না উৎসব আঙিনা এবং থাকবে না গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা। উৎসব শুরুর প্রথম দুই দিন পর্যন্ত অফ-সাইট নিবন্ধন চললেও তৃতীয় দিন থেকে এ সুযোগ থাকবে না। প্রতিদিন রাত একটায় বন্ধ হয়ে যাবে উৎসবের প্রবেশপথ। ভোরে আর্মি স্টেডিয়াম থেকে ফেরার জন্য বাস থাকবে নির্দিষ্ট রুটে।

View Full Article