বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের চতুর্থ দিন নৃত্য ও সুরের মূর্ছনায় ছুঁয়ে যাবে দর্শকপ্রাণ
খেয়ালের রাগ-রাগিনীতে বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের আজ চতুর্থ দিন। সুরের মহাসমুদ্রে ঢেউ তুলবেন প্রখ্যাত প-িতরা। সুরের খেলায় বিনিদ্র রজনীকে সঙ্গী করে নেওয়া সুরের এই মোহনায়। সুরের সঙ্গে যেন মায়াপুরীর মায়া নিয়ে এসেছেন শিল্পীরা। আর সেই মায়ার বেড়াজালে আবদ্ধ হলেন এ দেশের অগণিত সুরপাগল।
আজ আয়োজনটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টায়। চলবে ভোর পর্যন্ত। উপমহাদেশীয় শিল্পীরা পরিবেশন করবেন তাদের নিজ নিজ পরিবেশনা।
আজ বিভিন্ন পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে আসবেন দলীয় কত্থক নৃত্যে মুনমুন আহমেদ ও তার দল ‘রেওয়াজ’। তবলায় নীলেশ রণদেব, খেয়াল পরিবেশনায় জয়তীর্থ মেউন্ডি ও তবলায় আজিঙ্কা যোশি। তবলায় যুগলবন্দি হবেন প-িত যোগেশ শামসি ও প-িত শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। কর্ণাটক কণ্ঠসংগীত যুগলবন্দি হবেন রঞ্জনী ও গায়ত্রী। সরোদ পরিবেশনায় প-িত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার। তার সঙ্গে তবলায় সঙ্গত হবেন প-িত যোগেশ শামসি। সর্বশেষ খেয়াল পরিবেশন করবেন প-িত অজয় চক্রবর্তী। তবলায় তার সঙ্গে থাকবেন সৌমেন সরকার।
মুনমুন আহমেদ
বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য নৃত্যশিল্পী ও শিক মুনমুন আহমেদ। তিনি প্রাথমিক প্রশিণ গ্রহণ করেন আজহার খান ও সৈয়দ আবুল কালামের কাছে। দিল্লির ভারতীয় রামকলা কেন্দ্রে রামমোহন মহারাজ ও রাজকুমার শর্মার কাছে তিনি দীর্ঘদিন তালিম নেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কৃতিত্বের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে মুনমুন আহমেদ ১৯৮০ ও ১৯৮১ সালে শিশু একাডেমি প্রতিযোগিতা পুরস্কার, ১৯৮৮ সালে এনএইচকে জাপান পুরস্কার, ২০০০ সালে ইউনেস্কো কালচারাল অ্যাওয়ার্ড পদক, ২০০১ ও ২০০৩ সালে একতা অ্যাওয়ার্ডসহ নানা সম্মাননা অর্জন করেন।
প-িত অজয় চক্রবর্তী
শৈশব থেকেই অজয় চক্রবর্তীর বিরল সাংগীতিক প্রতিভার বিকাশ ঘটে। হাতেখড়ি পিতা অজিত চক্রবর্তীর কাছে। এরপর প-িত কানাইদাস বৈরাগী, ওস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খাঁর পুত্র ওস্তাদ মুনব্বর আলি খান এবং প-িত জ্ঞান প্রকাশ ঘোষের মতো প্রবাদপ্রতিম গুরুদের কাছে তালিম নেন। প-িত অজয় চক্রবর্তীর পুরস্কার ও অর্জনের তালিকা দীর্ঘ। পদ্মশ্রী, আইটিসি-এসআরএ স্বর্ণপদক, সংগীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার, ৪৫ অনূর্ধ্ব সেরা সংগীতশিল্পী হিসেবে কুমার গান্ধর্ব পুরস্কার, আলভার ভিরাসাত পুরস্কার, বঙ্গবিভূষণসহ অসংখ্য স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি।
প-িত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার
স্বনামধন্য সরোদিয়া প-িত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদারের হাতেখড়ি পিতামহ বিভূতিরঞ্জন মজুমদারের কাছে। গভীর সংগীতজ্ঞান ও কৌশলগত দক্ষতা এবং ধ্রুপদ, তন্ত্রকারী ও বিভিন্ন গায়কীর উপাদানে সমুজ্জ্বল তার পরিবেশনা। রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক, প-িত ডিভি পালুস্কার পুরস্কার এবং পশ্চিম বাংলা সরকার প্রদত্ত সংগীত মহাসম্মান অর্জন করেছেন তিনি। ঢাকার বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের তিনি একজন সম্মানিত গুরু।
রঞ্জনী ও গায়ত্রী
রঞ্জনী ও গায়ত্রী বালসুব্রহ্মণ্যন ভগ্নিদ্বয় প্রতিষ্ঠিত কর্ণাটকি কণ্ঠশিল্পী ও বেহালাবাদক জুটি। অল্প বয়সেই সংগীতশিক্ষা শুরু হয় সম্মুখানন্দ সংগীত বিদ্যালয়ে অধ্যাপক টিএস কৃষ্ণস্বামীর কাছে। একক ও যুগল পরিবেশনা উভয়েই তাদের মুনশিয়ানার ছাপ রয়েছে। ড. বালমুরালি কৃষ্ণ, টি বিশ্বনাথনসহ অন্যান্য বিশিষ্ট শিল্পীর সঙ্গে তারা মঞ্চ ভাগ করে নিয়েছেন। রঞ্জনী ও গায়ত্রী তাদের পরিবেশনার জন্য বিভিন্ন পদক ও খেতাবে ভূষিত হয়েছেন।