Menu

বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎ​সব ২০১৬ ফুরোল সুরে ভাসার রাতগুলো

thumbnail আর্মি স্টেডিয়ামে উচ্চাঙ্গসংগীত উৎ​সবের শেষ দিন গতকাল সন্তুর বাজিয়ে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা l ছবি: আশরাফুল আলম

রাতভর শুদ্ধসংগীতে ডুবে থাকার উৎসব শেষ। কত তোড়জোড়, প্রস্তুতির পর একটি মায়াবী ঘোরের মধ্য দিয়ে কেটে গেল পাঁচটি রাত।

গত রাতের আর্মি স্টেডিয়াম তখন শ্রোতাপূর্ণ। গ্যালারি, মাঠের চেয়ার, মধ্যমাঠের ঘাসজুড়ে বসে থাকা দর্শকদের উদ্দেশে পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা বললেন, ‘শান্ত হয়ে বসুন’, যেটা তিনি প্রতিবারই করেন। বললেন, ‘শুদ্ধসংগীত বোঝার নয়, অনুভবের ব্যাপার। যোগেশ শামসির সঙ্গে আমি আলাপ শুরু করব। কী করব এখনো ঠিক করিনি।’ সন্তুরে বাজিয়ে শোনালেন যোগ আলাপ-জোড়-ঝালা, রূপক তাল ও তিন তাল। কুড়ালেন মুগ্ধ শ্রোতার প্রীতি।

গতকাল সোমবার বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব ২০১৬-এ শেষ রাতের প্রথম পরিবেশনা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের। পরে ছিল বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের শিক্ষার্থীদের সেতার পরিবেশনা। এরপরই ছিল সমাপনী অধিবেশন। তাতে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপারসন স্যার ফজলে হাসান আবেদ। ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন। এ আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা সবাইকে ধন্যবাদ জানান বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের। গত এক বছরে হলি আর্টিজানসহ নানা ঘটনায় যত মানুষকে হারিয়েছে বাংলাদেশ, তাঁদের জন্য দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করার আহ্বান জানান তিনি। ধন্যবাদ দিয়ে মঞ্চে ডেকে নেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী, ব্লুজ কমিউনিকেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরহাদুল ইসলাম এবং বেঙ্গল এক্সপ্রেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জীনাত চৌধুরীকে।

ফজলে হাসান আবেদ বলেন, ‘বেঙ্গল ফাউন্ডেশন যে কাজ করছে, তা সফলভাবে করতে পারলে এ দেশেই আমরা নতুন রবিশঙ্কর পাব।’ বেঁচে থেকে এই উৎসবের দশম আয়োজনটিও উপভোগ করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। আনিসুজ্জামান বলেন, ‘এটি একটি অসাধারণ ঘটনা যে হাজার হাজার মানুষ সারা রাত ধরে এ সংগীত শুনে তৃপ্তি নিয়ে বাড়ি ফিরছে। এ আমাদের সাংস্কৃতিক চেতনারই মাপকাঠি।’

রোববার মাঝরাতের পর যুগলবন্দীতে কর্ণাটকি কণ্ঠসংগীত পরিবেশন করেন রঞ্জনী ও গায়ত্রী বালাসুব্রামানিয়াম। সরোদে রাগ গুঞ্জি কানাড়া, আলাপ–জোড় ঝালা ও বিলম্বিত তিন তালে গৎ ও শেষে রাগ যোগিয়া কালিংগ্রা পরিবেশন করেন তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদার। সেই রাতের শেষ পরিবেশনা ছিল অজয় চক্রবর্তীর খেয়াল।

গতকাল সোমবার শেষ রাতের শিল্পীদের তালিকায় আরও ছিলেন খেয়ালে কুমার মারদুর, আরতী অঙ্কালিকার, সেতারে কুশল দাস ও বাঁশিতে হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া। রাত বাড়ার পর বাড়তে থাকে দর্শক-শ্রোতা। কয়েকজন বললেন, চৌরাসিয়ার বাঁশির সঙ্গে সঙ্গে ভোর দেখতে এসেছেন তাঁরা। পঞ্চমবারের মতো বেঙ্গল ফাউন্ডেশন আয়োজিত এ উৎসবের নিবেদক ছিল স্কয়ার গ্রুপ, সহায়তায় ব্র্যাক ব্যাংক ও ব্যবস্থাপনায় ব্লুজ কমিউনিকেশনস।

 

View Full Article