Menu

বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসঙ্গীত উত্সব ২৪ থেকে ২৮ নভেম্বর

thumbnail

 

পঞ্চমবারের মতো আয়োজিত হতে যাচ্ছে ‘বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসঙ্গীত উত্সব’। আগামী ২৪ থেকে ২৮ নভেম্বর প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে পরদিন ভোর ৫টা পর্যন্ত ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে উত্সব অনুষ্ঠিত হবে। গত চার বছর ধরে আয়োজিত এই অনুষ্ঠান শিল্পী ও দর্শকের অংশগ্রহণের বিচারে এরই মধ্যে এই উপ-মহাদেশে তথা বিশ্বে সবচেয়ে বড় পরিসরের উচ্চাঙ্গসংগীত আসর হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। আর্মি স্টেডিয়ামে আয়োজিত এবারের উত্সবে ধ্রুপদী সঙ্গীতের নামকরা শিল্পীরা অংশ নেবেন। বাংলাদেশ থেকেও ১৬৫ জন শিল্পী এবারের উত্সবে অংশ নেবেন। পাঁচ দিনের এই উত্সব এবছর উত্সর্গ করা হয়েছে সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হককে।
গতকাল সোমবার হোটেল ওয়েস্টিনে এবারের উত্সব প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে জানানো হয়, এবারও আগের বছরগুলোর মতোই অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে দর্শকদের অংশগ্রহণের টিকিট দেয়া হবে। আয়োজকরা জানান, ৫০ হাজারের বেশি রেজিস্ট্রেশন নেয়া হবে না। তাই খুব অল্প সময়ের জন্য রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু থাকবে। সে কারণে উন্মুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই  রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন পহেলা নভেম্বর শুরু হবে। যারা অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন না তারা ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয় ও খিলক্ষেতে বেঙ্গল সেন্টারে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করাতে পারবেন। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিচার করে এবারের উত্সবে নিরাপত্তাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সেজন্য এবারের উত্সবে রাত একটার পরে কেউ আর্মি স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে পারবেন না। এছাড়া কেউ কোনো ধরনের ব্যাগ বহন করতে পারবেন না। প্রত্যেক ব্যক্তিকে শনাক্তকরণ পরিচয়পত্র (জাতীয় পরিচয়পত্র, অফিসের পরিচয়পত্র) সঙ্গে রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন আয়োজকরা। এবার উত্সবস্থলে গাড়ি পার্কিং-এর কোনো ব্যবস্থা থাকছে না। সে কারণে নিজ নিজ গাড়ি রাখার ব্যবস্থা নিজেদের উদ্যোগে করতে হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। এছাড়া কোনো ধরনের খাবার, পানীয় সঙ্গে আনা যাবে না। উত্সব প্রাঙ্গণে খাবারের রকমারি আয়োজন রাখা হবে। বিস্তারিত জানতে দেখতে পারেন: www.bengalclassicalmusicfest.com
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী, ব্র্যাক ব্যাংকের হেড অব কমিউনিকেশন্স জারা মাহবুব, বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের লিটু, মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী, বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা আব্দুল মোমেন প্রমুখ। আবুল খায়ের লিটু বলেন, এবছর নানা অস্থিরতার কারণে এত বড় পরিসরের উত্সব আয়োজন নিয়ে উত্কণ্ঠা দেখা দিয়েছিল। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উচ্চাঙ্গসঙ্গীত উত্সবের গুরুত্ব ও মর্যাদা অনুধাবন করে সরকার আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার আয়োজন করে উত্সব করতে যাবতীয় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে পঞ্চমবারের মতো ‘বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসঙ্গীত উত্সব’ আয়োজনে আমরা ব্রতী হয়েছি।
উত্সবে যারা অংশ নিচ্ছেন
এবারও উত্সব মুখর করে তুলতে আসছেন বিদুষী গিরিজা দেবী, পণ্ডিত জরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া, পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা ও তার ছেলে রাহুল শর্মা, পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী। আসছেন বাংলাদেশের কিংবদন্তিতুল্য শিল্পী ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর নাতি ওস্তাদ আশিষ খাঁ, ‘জাসরাঙ্গি’ পরিবেশন করবেন জয়পুর আত্রৌলির বিদুষী অশ্বিনী ভিদে ও মেওয়াতি ঘরানার পণ্ডিত অভয়ঙ্কর। পশ্চিমা ও কর্ণাটকী ঢংয়ের বেহালা বাজাবেন ড. এল সুব্রহ্মণ্যন। উত্সবে প্রথমবারের মত ‘ম্যান্ডোলিন’ ও বাঁশির যুগলবন্দী শোনাবেন বাঁশিশিল্পী পণ্ডিত রনু মজুমদার ও ইউ রাজেশ। ওড়িশি নৃত্য নিয়ে আসবেন বিদুষী মাধবী মুডগাল ও আরুশি মুডগাল। আসবেন পণ্ডিত উল্লাস কশলকর, ওস্তাদ রশিদ খান, পণ্ডিত কুশল দাস, পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার, পণ্ডিত উদয় ভাওয়ালকার, ড. প্রভা আত্রে, তবলিয়া অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।
বাংলাদেশি শিল্পীদের অংশগ্রহণ
বাংলাদেশের ১৬৫ জন শিল্পী উত্সবে অংশগ্রহণ করবেন। উত্সবের উদ্বোধনী পর্বে স্বনামধন্য নৃত্যশিক্ষক শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচনা ও নির্দেশনায় নৃত্যনন্দন দলের প্রায় ষাটজন শিল্পী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূল গান ও ভাঙা গানে মণিপুরী, ভরতনাট্যম, ওডিশি ও কত্থক রীতির রূপায়ণ পরিবেশন করবেন। প্রথিতযশা শিল্পী মুনমুন আহমদ তার দল নিয়ে কত্থক পরিবেশন করবেন উত্সবের চতুর্থ দিন শিল্পী প্রিয়াংকা গোপ এককভাবে খেয়াল এবং তারই নির্দেশনায় দলগতভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা শাস্ত্রীয়সংগীত পরিবেশন করবেন শেষদিন। উত্সবের দ্বিতীয় দিন মোহাম্মদ শোয়েবের নির্দেশনায় শিক্ষার্থীরা দলীয়ভাবে নিরীক্ষামূলক রাগসংগীত উপস্থাপন করবেন। বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্নদিনে দলীয়ভাবে সেতার, সরোদ ও তবলা পরিবেশন করবেন।