Menu

রাগ-রাগিণীর ইন্দ্রজাল

thumbnail

 

আবির ছড়ানো মূর্ছনার আসর বসছে আরও একবার। পাঁচ রজনীর এ আসরে থাকছে ধ্রুপদ-খেয়াল-টপ্পা-ঠুমরি এবং ভরতনাট্যম-ওডিসি-কত্থকসহ শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও নৃত্যের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের কীর্তিমানদের সমাবেশ ঘটাতে পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসঙ্গীত উৎসব ২০১৬’। শুদ্ধ সঙ্গীতের এ আয়োজন নিয়ে লিখেছেন রাসেল আজাদ বিদ্যুৎ

 

আরও কিছু রাতজাগানিয়া গল্পের জন্ম হবে, যে গল্পের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত থাকবে রাগ-রাগিণীর কথামালা। রচয়িতা শোনাবেন, কীভাবে তার মতো অগণিত দর্শক-শ্রোতা পাঁচ রজনী বন্দি হয়েছিলেন সুর-লহরির ইন্দ্রজালে। অবিশ্বাস্য মনে হলেও সে কোনো কাল্পনিক গল্প হবে না। হবে বাস্তব ঘটনার বয়ান। কেননা, বছর ঘুরে আবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসঙ্গীত উৎসব ২০১৬’। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আগামী ২৪ নভেম্বর শুরু হচ্ছে এ উৎসব। পঞ্চমবারের এ আয়োজনে এবারও থাকছেন পৃথিবীর খ্যাতিমান শিল্পী ও সঙ্গীতায়োজকরা। ঢাকা আর্মি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত পাঁচ দিনের এ উৎসব নিয়ে আয়োজকরা জানান, বর্ণিল এ সুরের আয়োজনে এবার অংশ নেবেন বাংলাদেশের ১৬৫ জন শিল্পী। তাদের মধ্যে উদ্বোধনী পর্বে শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায় নৃত্যনন্দন দলের ষাটজন শিল্পীকে নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূল গান ও ভাঙা গানে মণিপুরি, ভরতনাট্যম, ওডিশি ও কত্থক রীতির রূপায়ণ পরিবেশন করবেন। মুনমুন আহমদ ও তার দল পরিবেশন করেবে কত্থক নৃত্য। প্রিয়াঙ্কা গোপের খেয়ালের পাশাপাশি উৎসবে থাকছে মোহাম্মদ শোয়েবের নির্দেশনায় তার শিক্ষার্থীদের পরীক্ষামূলক রাগসঙ্গীত। উৎসবের বিভিন্ন দিনে সেতার, সরোদ ও তবলায় যন্ত্রসঙ্গীত পরিবেশন করবেন বেঙ্গল পরম্পরা সঙ্গীতালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া এবার উৎসবে অংশ নিচ্ছেন বেনারস ঘরানার প্রবাদপ্রতিম শিল্পী বিদুষী গিরিজা দেবী, আলাউদ্দিন খাঁর বংশধর ওস্তাদ আশীষ খাঁ। জাসরাঙ্গি যুগলবন্দি পরিবেশনায় অংশ নেবেন বিদুষী অশ্বিনী ভিদে ও পণ্ডিত সমঞ্জীব অভয়ঙ্কর। বেহালা শোনাবেন এল সুব্রহ্মণ্যন। তার পাশাপাশি মঞ্চ আলোকিত করবেন বিদুষী মাধবী মুদগাল ও তার শিষ্য আরশি মুদগাল। বাঁশি ও ম্যান্ডোলিনের যুগলবন্দি তুলে ধরবেন রনু মজুমদার ও ইউ রাজেশ। বিগত বছরের মতো এবারও অংশ নেবেন প্রবাদপ্রতিম বাঁশরিয়া পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া। শোনা যাবে পণ্ডিত শিবকুমার শর্মার মোহনীয় সন্তুরের সুর। কণ্ঠ ও বাদ্যের নানা পরিবেশনা নিয়ে হাজির হবেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, পণ্ডিত উলহাস কশলকর, ওস্তাদ রশিদ খান, পণ্ডিত কুশল দাস, পণ্ডিত তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদার ও পণ্ডিত উদয় ভাওয়ালকর। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত চলবে সুর-তাল ও লয়ের খেলার বৈচিত্র্যময় পরিবেশনা। উৎসব উৎসর্গ করা হয়েছে সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হককে। চার বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে আয়োজিত বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসঙ্গীত উৎসব দেশের দর্শক-শ্রোতার মনে দারুণভাবে প্রভাব ফেলেছে। সে কারণে এর দর্শক যেমন বেড়েছে, তেমনি নতুন প্রজন্মের শিল্পীরাও আগ্রহী হয়ে উঠেছেন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রতি। এবারের বর্ণাঢ্য আয়োজনও তাই দর্শক-শ্রোতার মনে সুরে অনুরণন তুলবে_ আয়োজকদের মতো আমরাও এটা আশা করি।

 

View Full Article