Menu

শুরু হলো পঞ্চরজনীর ধ্রুপদী সুরলহরি

thumbnail বেঙ্গল শাস্ত্রীয় সঙ্গীত উৎসবে প্রবীণ গৌদখিন্দি বাঁশি বাজাচ্ছেন, সাথে বেহেলায় রাতিশ তাগদে ও তবলায় রামদাস পালসুল : নয়া দিগন্ত

কর্মব্যস্ত রাজধানীর কান্ত নাগরিকদের গীতসুধারসে আপ্লুত করতে গতকাল সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়েছে স্কয়ার নিবেদিত বেঙ্গল শাস্ত্রীয় সঙ্গীত উৎসব। চলবে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত। পরপর পাঁচবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ উৎসব। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত চলবে সুর, তাল ও লয়ের খেলায় বৈচিত্র্যময় ধ্রুপদী পরিবেশনা।
দর্শক-শ্রোতার সংখ্যার বিচারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় উচ্চাঙ্গসঙ্গীত আসরের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত উৎসবটি এ বছর উৎসর্গ করা হয়েছে সদ্য পরলোকগত সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হককে। স্কয়ার নিবেদিত এ উৎসবের আয়োজক বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। সহযোগিতায় রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক।
শ্রোতাদের নিরাপত্তার স্বার্থে এবার বেশ কিছু নতুন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। অন্যবারের মতো এবার উৎসব প্রাঙ্গণে নিবন্ধনের কোনো ব্যবস্থা থাকবে না। রাত ১টায় বন্ধ হয়ে যাবে আর্মি স্টেডিয়ামের দরজাগুলো। থাকবে না গাড়ি পার্কিংয়ের কোনো ব্যবস্থা। এরপর আর কেউ ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন না। এ ছাড়া এবার কোনো প্রকার ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না। আনা যাবে না ল্যাপটপ বা ক্যামেরাও।
গতকাল উৎসবের সূচনা হয় বাংলাদেশের শিল্পীদের পরিবেশনা দিয়ে। ‘রবি-করোজ্জ্বল’ শীর্ষক দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন বাংলাদেশের স্বনামধন্য শিল্পী শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার দল নৃত্যনন্দন। নৃত্যশৈলীর নানা ধারা রবীন্দ্রনাথে এসে মিলেছিল যে মোহনায়, তার উৎস ও পরম্পরা দিয়ে গাঁথা ছিল রবি-করোজ্জ্বল নৃত্যমালিকা। এর পরেই শুরু হয় বাঁশি ও বেহালার যুগলবন্দী। বাঁশি বাজিয়েছেন প্রবীণ গোদখিণ্ডির। রাতিশ টাগড় বাজিয়েছেন বেহালা। তবলায় ছিলেন রামদাস পালসুল। এই সুন্দর পরিবেশনার পর দেয়া হয় সাময়িক বিরতি। ঘড়ির কাঁটায় তখন রাত সাড়ে ৯টা।
এই পর্যায়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। সংপ্তি আনুষ্ঠানিকতা শেষে আবার শুরু হয় পরিবেশনা। ঢাকার শ্রোতাদের অত্যন্ত প্রিয় প্রবীণ উচ্চাঙ্গসঙ্গীতশিল্পী বিদূষী গিরিজা দেবী পরিবেশন করেন খেয়াল। শাস্ত্রীয় সঙ্গীত উৎসবে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন তিনি। সেনিয়া ও বেনারস ঘরানার শিল্পীর পরিবেশনা অন্য রকম শিহরণ তোলে শ্রোতা-দর্শকদের মনে। এ ছাড়া গভীর রাতে সরোদ বাজানোর কথা ওস্তাদ আশিষ খানের। তারপর খেয়াল যুগলবন্দী ‘জাসরাঙ্গি’ পরিবেশন করার কথা বিদূষী অশ্বিনী ভিদে দেশপাণ্ডে ও পণ্ডিত সঞ্জীব অভয়ঙ্কর। ভোররাতে প্রথম দিনের আয়োজনের শেষ হওয়ার কথা ড. এল সুব্রহ্ম্যণনের বেহালা বাদনের মধ্য দিয়ে।
উৎসবের দ্বিতীয় দিনে আজ শুক্রবার অনুষ্ঠান শুরু হবে বিদূষী মাধবী মুডগাল ও আরুশি মুডগালের ওড়িশি নৃত্যের পরিবেশনা দিয়ে। ওড়িশি নৃত্যধারার খ্যাতিমান প্রবক্তা শিল্পী মাধবী মুডগাল। আরুশি মুডগালও ওড়িশি নৃত্যধারার জনপ্রিয় শিল্পী। কৌশলগত উৎকর্ষ ও মূলধারার নৃত্যে নতুন মাত্রা সংযোজনের জন্য সুনাম অর্জন করেছেন। দ্বিতীয় পরিবেশনাটি বেঙ্গল পরম্পরা সঙ্গীতালয়ের শিার্থীদের। দলীয় তবলা পরিবেশন করবেন চিন্ময় ভৌমিক, ফাহমিদা নাজনিন সুমাইয়া, এম জে জে ভুবন, নুসরাত-ই-জাহান খুশবু, পঞ্চম স্যানাল, প্রশান্ত ভৌমিক ও সুপান্থ মজুমদার। খেয়াল পরিবশেন করবেন বাংলাদেশের শিল্পী প্রিয়াঙ্কা গোপ। উৎসবের প্রিয় শিল্পী রাহুল শর্মা সন্তুর বাজিয়ে শুনাবেন। তিনি পণ্ডিত শিবকুমার শর্মার ছেলে। রিচার্ড কেডারম্যান ও কার্সি লর্ডসহ খ্যাতিসম্পন্ন বহু গায়ক ও বাদকের সাথে একই মঞ্চে সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন। রাহুল ভারতীয় সিনেমার জনপ্রিয় সঙ্গীত পরিচালক। তবে ধ্রুপদী সঙ্গীত এবং নিরীাধর্মী সঙ্গীতে রয়েছে তার বিশেষ দতা। এদিন দলীয় কণ্ঠসঙ্গীত পরিবেশন করবেন মোহম্মদ শোয়েব। সেতার বাজাবেন পূর্বায়ণ চট্টোপাধ্যায়। পণ্ডিত উল্লাস কশলকারের খেয়াল শোনার জন্য প্রতিবার বিপুল আগ্রহ নিয়ে অপো করেন শ্রোতৃবৃন্দ। এ।ী দিন রাতে খেয়াল পরিবেশন করেন তিনি। এরপর বাঁশি ও ম্যান্ডোলিনের যুগলবন্দী। পণ্ডিত রনু মজুমদারের বাঁশি ও ইউ. রাজেশের ম্যান্ডোলিন কথা বলবে একসাথে।

View Full Article