সুরের মূর্ছনায় মুখরিত বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীতের প্রথম রাত
বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের আয়োজনে পঞ্চমবারের মতো শুরু হলো পাঁচ দিনব্যাপী বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে পাঁচদিনব্যাপী উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের উদ্বোধনী পর্বে প্রদীপের আলোকচ্ছটায় অভিবাদন জানানো হয় দর্শকদের। এরপর শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয় দলীয় নৃত্য। নৃত্যশৈলীর নানা ধারা রবীন্দ্রনাথে এসে মিলেছিল যে মোহনায়, তার উৎস ও পরম্পরা দিয়ে গাঁথা হয় পরিবেশনা ‘রবি-করোজ্জ্বল নৃত্যমালিকা’।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অংশে ছিল মণিপুরী নৃত্য। এরপর একে একে ভরতনাট্যম, প্রদীপনাচ, রাধাকৃষ্ণ, পুংচালাম, ওড়িশি ও কত্থক আঙ্গিক, রবীন্দ্র নৃত্যভাবনা এবং বাংলাদেশে যে কটি শাস্ত্রীয় নৃত্য প্রচলিত এবং চর্চিত সেগুলো অবলম্বনে নৃত্য পরিবেশন করেন শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার দল নৃত্যনন্দন। পরিবেশন শেষে শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে উৎসবের সম্মাননা স্মারক তুলে দেন মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল।
থম দিনের দ্বিতীয় পরিবেশনা ছিল প্রবীণ গোদখিণ্ডি ও রাতিশ টাগডের বাঁশি ও বেহালার যুগলবন্দী। তারা রাগ মারু বিহাগ ও হংসধ্বনি পরিবেশন করেন। তবলায় ছিলেন রামদাস পালসুল। পরিবেশনা শেষে শিল্পীদের হাতে স্মারক তুলে দেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি শাহ সৈয়দ কামাল। দ্বিতীয় পরিবেশনা শেষে শাস্ত্রীয় সংগীতের দুই উজ্জ্বল নক্ষত্র প্রয়াত শিল্পী বালমুরালি কৃষ্ণ ও ওস্তাদ আলী আহমেদ হোসেনকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়।
বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের এ আসর শুরু হওয়ার মাত্র দুইদিন আগে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন শিল্পী বালমুরালি কৃষ্ণ। বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের চতুর্থ আসরে শিল্পী বালমুরালি কৃষ্ণ তার মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা দিয়ে দর্শকদের মন জয় করেছিলেন। ওস্তাদ আলী আহমেদ হোসেনের সানাই পরিবেশনা ছিল বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের প্রথম আসরে। এরপর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব ২০১৬ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
মঞ্চে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস্-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আর. এফ. হোসেন এবং বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মিথিলা ফারজানা।
এ বছর উৎসবটি সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের স্মৃতির উদ্দেশ্যে উৎর্সগ করা হয়েছে।