Menu

সেতারে শুরু খেয়ালে সমাপ্তি

thumbnail

বৈচিত্র্যের গুণেই শ্রোতাদের কাছে প্রিয় হয়ে উঠছে উচ্চাঙ্গসঙ্গীত উৎসব। শাস্ত্রীয় নৃত্য, কণ্ঠের খেলায়, কখনও ধ্রুপদী, যন্ত্রসঙ্গীতে সেতার, সরোদ, সন্তুর, বেহালা, কখনও বা বাঁশি, তবলার আলাদা আলাদাভাবে পরিবেশনা- শ্রোতাদের ভিন্ন ভিন্ন স্বাদ দিচ্ছে।

তাই সন্ধ্যা হলেই শ্রোতারা সুর-মূর্ছনায় মোহিত হতে ছুটে আসছেন ধানমণ্ডির আবাহনী মাঠে। ভোর পর্যন্ত বুঁদ হয়ে থাকছেন সুরের মায়াজালে।

বৃহস্পতিবার উত্সবের ষষ্ঠ আসরের তৃতীয় দিনে ছিল বৈচিতর্্যেভরা পরিবেশনা। শুরু হয় বেঙ্গল পরম্পরা সঙ্গীতালয়ের শিক্ষার্থীদের সেতার বাদনের মধ্য দিয়ে।

আর ভোরে তা শেষ হয় অজয় চক্রবর্তীর কণ্ঠে খেয়াল পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। আর মাঝখানের সময়টাতে ছিল ঘাটম আর কঞ্জিরার যুগলবন্দি, সরোদ, বাঁশি আর বেহালায় রাগ-রাগিণীর সুর।

বেঙ্গল ফাউন্ডেশন আয়োজিত ও স্কয়ার নিবেদিত এ উত্সবে সহযোগিতা করছে ব্র্যাক ব্যাংক। আর এবারের উৎসব উৎসর্গ করা হয়েছে ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানকে।

উত্সবের তৃতীয় দিনের আয়োজনের শুরুটা ছিল দেশের শিল্পীদের পরিবেশনা দিয়ে। বেঙ্গল পরম্পরা সঙ্গীতালয়ের শিক্ষার্থীরা সেতার বাজিয়ে শোনান।

দলে ছিলেন প্রসেনজিত্ মণ্ডল, টিএম সেলিম রেজা, রিঙ্কু চন্দ্র দাস, মেহরীন আলম, জ্যোতি ব্যানার্জী, মোহাম্মাদ কাউসার এবং জাহাঙ্গীর আলম শ্রাবণ। তাদের সঙ্গে তবলায় ছিলেন প্রশান্ত ভেৌমিক ও সুপান্থ মজুমদার।

কুশল কুমার দাসের কম্পোজিশনে তারা কিরওয়ানি রাগে সেতার অর্কেস্ট্রা পরিবেশন করেন। পরিবেশনা শেষে শিল্পীদের হাতে উত্সব স্মারক তুলে দেন বরেণ্যশিল্পী বিদ্বান ভিক্ষু বিনায়ক রাম।

এরপর ঘাটম ও কঞ্জিরার যুগলবন্দি নিয়ে মঞ্চে আসেন পিতা-পুত্র বিদ্বান ভিক্ষু বিনায়ক রাম ও সেলভাগনেশ বিনায়ক রাম। তাদের সঙ্গে কাঞ্জিরা ও কোনাক্কল বাজিয়েছেন স্বামীনাথন। মোরসিংয়ে ছিলেন এ গণেশন।

নিজেদের পরিবেশনার শুরুতেই তারা ঘাটমে শিবস্তব করেন। পরে তারা গুরুবন্দনা ও গণপতি বাজিয়ে দর্শকদের মাঝে মুগ্ধতা ছড়িয়ে দেন। শিল্পীদের হাতে উৎসবের স্মারক সম্মাননা তুলে দেন বর্্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপারসন স্যার ফজলে হাসান আবেদ।

এরপর আবার দেশের শিল্পীদের পরিবেশনা। খেয়াল পরিবেশন করেন সরকারি সঙ্গীত কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

১৮ সদস্যের এ দলটিতে ছিলেন আশা খন্দকার, বিটু কুমার শীল, দেবজানি দাস, ড. ফকির সুমন, জিএম সাইফুল ইসলাম, জোহরা হোসাইন, মলি্লকা ওঝা, গোলাম মোস্তফা, মমিন মিয়া, মুরাদ হোসাইন, নিউটন বৈরাগী, নিত্য গোপাল ঠাকুর, অর্বি শর্মি, শারমিন সুলতানা স্মৃতি, কৃষ্ঞ গোপাল, সুমা বেপারী, সুস্মিত সাহা ও তমালিকা হালদার।

তারা পরিবেশন করেন রাগ মালকোষ। তাদের অনবদ্য পরিবেশনা শেষে সরোদ নিয়ে মঞ্চে আসেন ভারতের প্রখ্যাত সরোদশিল্পী আবির হোসেন। তার সঙ্গে তবলায় সঙ্গত করেন যোগেস সামসি।

আবির হোসেন সরোদে রাগ আভোগী পরিবেশন করেন। সরোদ মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা শেষে দেশের প্রখ্যাত বংশীবাদক গাজী আবদুল হাকিম সুর তোলেন তার বাঁশিতে।

বাঁশির সুর থামতেই মঞ্চে আসেন ভারতের উদয় ভাওয়ালকর। বেঙ্গল পরম্পরা সঙ্গীতালয়ের এ শিক্ষকের পরিবেশনায় ছিল ধ্রুপদ। এরপর বেহালার সুর নিয়ে মঞ্চে আসেন ভারতের বিদুষী কালা রামনাথ। তৃতীয় দিনের শেষ পরিবেশনায় খেয়াল পরিবেশন করেন অজয় চক্রবর্তী।

আজ চতুর্থ দিনের আয়োজন: উৎসবের চতুর্থ দিন অর্থাত্ আজ শুক্রবারের আয়োজনের শুরুতেই রয়েছে শাস্ত্রীয় নৃত্য পরিবেশনা। মনিপুরি, ভরতনাট্যম ও কত্থক নৃত্য পরিবেশন করবেন সুইটি দাস, অমিত চেৌধুরী, স্নাতা শাহরিন, সুদষ্ঞো স্বয়মপ্রভা, মেহরাজ হক এবং জুয়াইরিয়াহ মৌলি।
সরোদ বাজিয়ে শোনাবেন বেঙ্গল পরম্পরা সঙ্গীতালয়ের শিক্ষার্থীরা। খেয়াল পরিবেশন করবেন ওস্তাদ রাশিদ খান, সরোদ বাজাবেন তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদার, বেহালা বাজিয়ে শোনাবেন ড. মাইশুর মঞ্জুনাথ, খেয়াল পরিবেশন করবেন যশরাজ। চেলোতো সঙ্গীত পরিবেশন করবেন সাসকিয়া রাও দ্য-হাস। সবশেষে রয়েছে বুদ্ধাদিত্য মুখার্জীর সেতার পরিবেশনা।

পঞ্চম ও শেষ দিনের আয়োজন: উৎসবের পঞ্চম ও শেষ দিন শনিবারের আয়োজনের শুরুতেই রয়েছে বিদুষী সুজাতা মহাপাত্রের ওড়িশি নৃত্যের পরিবেশনা।
মোহন বীণা পরিবেশন করবেন বিশ্বমোহন ভট্ট, খেয়াল পরিবেশন করবেন ব্রজেশ্বর মুখার্জী। যেৌথভাবে সেতার বাদনে অংশ নেবেন কুশল দাস ও কল্যাণজিত দাস।

অন্যবারের মতো এবারও হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়ার বাঁশিবাদনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে উৎসব।

View Full Article